নিজস্ব প্রতিনিধি: পাঁচ বছরের প্রেম, তিন বছরের লিভ ইন। কিন্তু কোথাও কী মনের অন্দরে দানা বেঁধেছিল সঙ্গীকে নিয়ে কোনও আশঙ্কা? সেই প্রশ্নটা তুলে দিয়ে নিজেকে শেষ করে দিল এক যুবক। নাম সুশান্ত বারুই(২১)। বাড়ি পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdhwan) জেলার কালনা(Kalna) থানার শাসপুর দিঘির পশ্চিম পাড় এলাকার বাসিন্দা। আর পাঁচজনের জীবনে যেমন প্রেম-ভালবাসা আসে, ঠিক তেমনটাই এসেছিল সুশান্তের জীবনে। তবে সেই প্রেম বা ভালবাসা সমাজের চোখে সঠিক ছিল না। কেননা সুশান্ত প্রেমে পড়েছিলেন এক পুরুষের। নাম তাঁর শংকর ঢালি। বাড়ি তাঁর হুগলি(Hooghly) জেলার বলাগড় থানার গুপ্তিপাড়ার(Guptipara) মিরডাঙ্গা কলোনিতে। সুশান্তের সঙ্গে শংকরের এই সম্পর্ক(Gay Relationship) মেনে নিতে পারেনি সুশান্তের পরিবার। তবে শংকরের পরিবারে তা নিয়ে কোনও আপত্তি ছিল না। তাই সুশান্ত বছর ৩ আগেই নিজের বাড়ি ছেড়ে শংকরের সঙ্গে তাঁর মিরডাঙ্গা কলোনিতে থাকা শুরু করে। আর সেখানেই সে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করায় ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ানোর পাশাপাশি বেশ রহস্য দানা বেঁধেছে।
আরও পড়ুন ৪৪ বছর পার, আজও কেউ শাস্তি পায়নি মরিচঝাঁপি গণহত্যাকান্ডে
রহস্য কোথায়? প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে গুপ্তিপাড়া স্টেশনের কাছে বোতল পরিষ্কার করার পাউডার খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সুশান্ত। তার পরই সুশান্ত শংকরকে ফোনে সে কথা জানায়। এর পরই শংকর বিষয়টি জানতে পেরে তড়িঘড়ি তাঁকে কালনা হসপিটালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা সুশান্তকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু সুশান্তের পরিবারের দাবি, বিষ খেয়ে মৃত্যুর যে কথা সামনে আনা হচ্ছে তা সত্য নয়। এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য। কোথায় রহস্য? জানা গিয়েছে, সুশান্ত ও শংকরের মাঝে আরও এক তৃতীয় পুরুষের আগমন ঘটেছিল। সেই আগমন মেনে নিতে পারেনি সুশান্ত। কেননা শংকরকে ভালবেসে সে সব কিছু ছেড়ে, সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, শংকরের বাড়িতে এসে তাঁর সঙ্গে ঘর বেঁধেছিল। সেই বাড়িতেই কীভাবে তৃতীয় পুরুষ সুদূর কাশ্মীর থেকে এসে হাজির হয় যদি না সেখানে কোনও প্রেম ভালবাসার সম্পর্ক না থাকে।
আরও পড়ুন বইমেলার জন্য করুণাময়ী থেকে বিশেষ বাস পরিষেবা চালু
সুশান্তের পরিবারের দাবি, সম্প্রতি শংকর কাশ্মীরের বাসিন্দা এক যুবক আকিব খানের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে আলাপ করেছিল। অন্তত সুশান্ত সেটাই জানিয়েছিল তাঁদের। যদিও এখন তাঁদের ধারনা ফেসবুক নয়, গ্রাইন্ডার বা রোমিও কিংবা ব্লুড-এর মতো কোনও গে চ্যাট অ্যাপস থেকেই হয়ত দুইজনের পরিচিয় হয়েছিল। কালনার সরস্বতী পুজো বেশ বিখ্যাত। সেই পুজো দেখতেই আকিব নাকি কাশ্মীর থেকে সোজা হাজির হয় শংকরের বাড়িতে যা মেনে নিতে পারেনি সুশান্ত। তা থেকেই দুইয়ের মধ্যে বিবাদ ও শেষে এই চরম পদক্ষেপ। এদিন দুপুরেই কালনা মহকুমা হসপিটালে সুশান্তের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে এলে বোঝা যাবে এই ঘটনা আত্মহত্যা নাকি খুন।