নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: চুঁচুড়া আদালতের বাইরে ইতস্থত ঘোরাঘুরি করছিল এক কিশোরী এবং যুবতী। নাবালিকার বয়স ১৬ বছর এবং যুবতীর বয়স ২১ বছর। পড়নের পোশাক ও চালচলন দেখে সন্দেহ হলেও সেভাবে কেউ পাত্তা দেয়নি। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে দু’জনকে এভাবে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় চুঁচুড়া আদালতের ল-ক্লার্ক পার্থ নিয়োগী এবং আইনজীবী মলয় মজুমদারের। তাঁরাই দুই জনকে উদ্ধার করে চুঁচুড়া থানার হাতে তুলে দেয়। তখনই জানা যায় ওই তরুণী ও কিশোরীর করুণ কাহিনী।
ওই তরুণী জানিয়েছে, দু’জনেরই একসময় বাড়ি-ঘর ছিল। কিন্তু হারিয়ে গিয়ে ঠাঁই হয় বর্ধমান স্টেশনে। তাঁরা দু’জন বর্ধমান স্টেশনে ভিক্ষা করে পেট চালাত। কিন্তু একদিন লিলু নামে এক ব্যাক্তির ফাঁদে পরে বিপদে পড়েন। কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ওই যুবক তাঁদের বিহারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেয়। এরপর থেকেই তাঁদের জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। টানা তিন বছর ধরে যৌন অত্যাচারের শিকার হয় দু’জন। পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও জলসায় চটুল গানের সঙ্গে যৌন উত্তেজক নাচে বাধ্য করা হতো।
অবশেষে সামান্য সুযোগ পেতেই দুজনে পালিয়ে চলে আসে। বিহার থেকে পালিয়ে হুগলির চুঁচুড়ায় চলে আসে তাঁরা। এক পরিচিতের বাড়ি গেলেও সেখানে ঠাঁই হয়নি। শেষে চুঁচুড়া আদালতের সামনে ঘোরাঘুরি করছিল ওই নাবালিকা এবং তরুণী। সেখান থেকেই তাঁদের উদ্ধার করেন ল-ক্লার্ক পার্থ নিয়োগী এবং আইনজীবী মলয় মজুমদার। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে চুঁচুড়া থানার পুলিশ। দুজনকে সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে।