নিজস্ব প্রতিনিধি: কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে এসে পুরুলিয়া(Purulia) শহরের এক ব্যবসায়ীকে মারধর ও তাঁর দোকানে ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠল স্থানীয় বিজেপি(BJP) বিধায়ক(MLA) সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের(Sudip Mukherjee) বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। স্বাভাবিক ভাবেই ঘটনাটি নিয়ে তীব্র অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে। তবে ঘটনার জেরে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কোনও পক্ষ থেকেই পুলিশের কাছ এই মর্মে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। মূল ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে। সেই সময়েই তা ফেসবুকে লাইভ করেন আক্রান্ত ব্যবসায়ী। রাতের মধ্যেই তা ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়াতে। আর তার জেরেই প্রশ্ন ওঠে ফেসবুকে সামান্য এক পোস্টের জেরে বিধায়ক কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে চড়াও হলেন ওই ব্যবসায়ীর ওপরে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও(TMC)।
তুষার অবস্তি নামের ওই তরুণ ব্যবসায়ী বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি নাম না করেই কটাক্ষ হানেন পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে। পোস্টে তুষার লেখেন, ‘আমাদের Mla Kaaltu বাবু এখন Mp এর মতন হয়ে গেছে, Vote দিয়েছে পুরুলিয়ার মানুষ আর কলকাতার নেতাদের পেছনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আমাদের কপাল টাই খারাপ একটা রেসিডেন্স দিবার মুরাদ নেই’। সেই পোস্টের জেরেই বৃহস্পতিবার রাতে নিজের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে চড়াও হন পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক। তুষারকে মারধর করার পাশাপাশি তাঁর দোকান ভাঙচুর করাও হয়। সেই ঘটনা আবার ফেসবুকে লাইভ করেন তুষার। আর তার জেরেই পুরুলিয়ার রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়।
ঘটনার জেরে তীব্র নিন্দা শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়েই। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বলে বলীয়ান বিজেপি বিধায়কদের ঔদ্ধত্য কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে সেই প্রশ্নও উঠে গিয়েছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে পুরুলিয়া পুরসভার পুরপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা নব্যেন্দু মাহালি জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনা শোনার পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ওই বিধায়কের নামে বহু অভিযোগ রয়েছে। কেউ ওঁর নামে খারাপ কিছু পোস্ট করলে উনি সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ করতে পারতেন। আর নাগরিক হিসেবে জনপ্রতিনিধিদের নাম করে তো যে কেউ নেটমাধ্যমে পোস্ট করতেই পারেন। এই ঘটনা কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বিজেপি কতটা অত্যাচারী, স্বৈরাচারী, একনায়কতন্ত্রী দল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে এভাবে মারধর করে বেড়ানো কখনই মেনে নেওয়া যায় না।’ যদিও এই ঘটনায় বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিবেক রাঙার দাবি, ‘ওই যুবক তৃণমূল করেন। সে নিজেই নিজের দোকান ভাঙচুর করে নাটক করে লাইভ করা শুরু করে দেয়। এগুলো শুধু সহানুভূতি আদায়ের জন্য এবং বিজেপির বদনাম করার জন্য করা হচ্ছে।’