নিজস্ব প্রতিনিধি: ফৌজদারি মামলায়(Criminal Offence) অভিযুক্ত হলেই যে কেউই আর পাসপোর্ট(Passport) পাবেন না এমনটা মোটেও নয়। বরঞ্চ কেউ যদি ফৌজদারী মামলায় দোষী সাব্যস্তও হন তাহলেও তিনি পাসপোর্ট পেতে পারেন। কেননা ভারত সরকার পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে সে সব যোগ্যতামান দিয়েছে সেখানে কোথাও বলা হয়নি যে কেউ ফৌজদারী মামলা অভিযুক্ত হলে বা দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি পাসপোর্ট পাবেন না। এমন রায় কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court)। হুগলির এক মহিলা বাসিন্দার করা মামলাতে এই রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। মহিলার নাম দেবরিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হুগলির(Hooghly) আরামবাগের(Aarambag) বাসিন্দা।
আরও পড়ুন সুপ্রিম রায়ে বাংলার ১৬ হাজার ৫০০ শিক্ষকের চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন
জানা গিয়েছে, দেবরিমার নামে ফৌজদারী মামলা রয়েছে। তাই তাঁর পাসপোর্ট আটকে দেওয়া হয়। সেই সূত্রেই দেবরিমা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। মামলাকারীর আইনজীবী কমলেশ ভট্টাচার্য এবং উত্তমকুমার রায় জানান, স্থানীয় যুবক পবিত্র সরকারের হঠাৎ মৃত্যু হয়। ওই যুবকের মৃত্যুর পর একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। যেখানে এই মহিলার নাম ছিল। যদিও সেটার সঙ্গে আত্মহত্যার কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু ফৌজদারি মামলা হওয়ায় পাসপোর্ট আটকে গিয়েছিল। মামলাটি শুনানির জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে ওঠে। সেখানেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, সংবিধানের ১৪ এবং ১৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কেউ ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলে তিনি পাসপোর্ট পাবেন না এটা হতে পারে না। কারণ এটা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে জড়িত। যদি পাসপোর্ট দেওয়া না হয় তাহলে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হবে। কিন্তু সেই পাসপোর্ট আদালত চাইলে জমা রাখতে পারে। পুলিশ আদালতের নির্দেশে নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারেন। কিন্তু পাসপোর্ট দেওয়াই হবে না এমনটা নয়।
আরও পড়ুন বাংলার ভোটে কেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
এরপরেই বিচারপতি নিম্ন আদালতকে নো–অবজেকশন রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেন। আর সেটাও আগামী একসপ্তাহের মধ্যে। সেই সঙ্গে পাসপোর্ট অথরিটিকে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন, একমাসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ দেবরিমার এবার আর বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকছে না যদি না কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের ওপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়। তবে পাসপোর্ট হাতে পেলেই যে দেবরিমা বিদেশ যেতে পারবে এমনটা নাও হতে পারে। কেননা নিম্ন আদালত যদি বলে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালতে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে, সেক্ষেত্রে দেবরিমার বিদেশ যাত্রা সম্ভব হবে না।