এই মুহূর্তে

সিবিআই-ইডি’র নজরে এবার ৮টি বিএড কলেজ আর কেরিম খান

নিজস্ব প্রতিনিধি: বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল(Anubrata Mondol) থুড়ি কেষ্ট চলে গিয়েছেন সিবিআইয়ের হেফাজতে। চলছে তাঁর ও তাঁর মেয়ের নামে-বেনামে থাকা সম্পত্তির খোঁজতল্লাশি। তাঁদের আয়ের উৎস কী তাও খতিয়ে দেখছেন সিবিআই(CBI) আধিকারিকেরা। কিন্তু তার মধ্যেই ২টি বিষয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর কর্তাদের নজর আটকেছে। এক কেষ্ট ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী কেরিম খানের(Kerim Khan) বিপুল সম্পত্তি এবং রাজ্যের ৩টি জেলার ৮টি বিএড কলেজ(B. ED College)। কেষ্ট’র দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের বাড়ি থেকে সিবিআই মাস দুই আগেই প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে। সেই সূত্রেই সায়গল গ্রেফতার হয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। প্রথমে মুখ না খুললেও পরে মুখ খুলে অনেক কথাই জানিয়েছে সায়গল। আর সেই সূত্রেই সিবিআই এখন দাবি করছে, গরু পাচারের(Cattle Smuggling) টাকা কেষ্ট’র নির্দেশে রাজ্যের ৩টি জেলার ৮টি বেসরকারি বিএড কলেজে বিনিয়োগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কেরিমের হেফাজতে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উৎসও খতিয়ে দেখতে চাইছেন তাঁরা। আর এই খোঁজখব্রে সিবিআইয়ের দোসর হচ্ছে ইডি(ED)-ও। 

জানা গিয়েছে, সিবিআই কর্তারা সায়গলকে জেরা করে জানতে পেরেছেন যে বিগত চার-পাঁচ বছরে বীরভূম, বাঁকুড়া ও পূর্ব বর্ধমান জেলায় মাথা তুলে দাঁড়ানো কিছু ঝাঁ চকচকে বেসরকারি বিএড কলেজ নাকি গড়ে উঠেছে গরু পাচারের টাকায়। এই কলেজগুলি গড়ে তোলার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের জোগান কোথা থেকে হয়েছে, তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দিয়েছে সিবিআই ও ইডির কর্তারা। ওই ৮টি বেসরকজারি বিএড কলেজ নির্মাণের ক্ষেত্রে যে টাকার সোর্স গোলমেলে ছিল সেটা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছেন ওই দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। তাই ওই ৮টি বেসরকারি বিএড কলেজের যাবতীয় নথি জোগাড় করা শুরু করেছেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে যে সব নথি তাঁদের হাতে এসেছে তাতে তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন যে, কলেজগুলি খোলার আগে একটি ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছিল। কয়েকটি কোম্পানি ঘুরে সেই ট্রাস্টে টাকা ঢুকেছে। একটি কোম্পানিতে আবার সায়গলের নামও রয়েছে। এই টাকা আসলে গরু পাচারের লভ্যাংশ যা এই ৮টি বেসরকারি বিএড কলেজ তৈরিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। জেরায় সায়গল নাকি সিবিআইয়ের কাছে স্বীকার করেছে যে, গরু পাচারের টাকা তাঁর কাছেই থাকত।

একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর নজরে আছে কেষ্ট ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী কেরিম খান। তাঁর আসল বাড়ি বীরভূম জেলার বোলপুর মহকুমার নানুরে হলেও সিউড়ি, রামপুরহাট, দুবরাজপুর, নলহাটি ও সাঁইথিয়াতেও বাড়ি আছে। ইতিমধ্যেই তাঁর সিউড়ির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন সিবিআই ও ইডি আধিকারিকরা। সেখান থেকেই বেশ কিছু নথিপত্র, পেনড্রাইভ সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। সেই সব নথি ও তথ্য ঘেঁটে দুই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন বোলপুর শান্তিনিকেতন এলাকায় নামে-বেনামে প্রচুর বাড়ি ও সম্পত্তি রয়েছে কেরিমের। যা আদতে গরু পাচারের টাকা থেকেই এসেছে। নানুরের থুপসারা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাঁতরা গ্রামে বাড়ি কেরিমের। জেলা রাজনীতিতে তিনি বরাবরই অনুব্রত-অনুগামী। কার্যত তাঁর হাত ধরেই তিনি বীরভূম জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হওয়ার পাশাপাশি নানুরের থুপসারা, নোয়ানগর-কড্ডা ও জলুন্দী পঞ্চায়েতের দায়িত্বে পেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রতিবছর তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে নানুরে আয়োজিত মিলন মেলায় অনুব্রত’র মাথায় কখনও তিনি রুপোর মুকুট তুলে দিয়েছে তো কখনও তুলে দিয়েছেন রুপোর তরোয়াল, রুপোর পাচন। কোথা থেকে এই টাকা এল সেটা এখন খতিয়ে দেখতে চাইছেন ইডি ও সিবিআই কর্তারা। সেই সঙ্গে বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত দফতরের কর্মাধ্যক্ষ থাকার সময়েও টেন্ডারে বহু বেনিয়মের অভিযোগ রয়েছে কেরিমের বিরুদ্ধে।

সিবিআই জানতে পেরেছে, বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত দফতরের কর্মাধ্যক্ষ থাকার সময়ে কেরিম রাস্তা তৈরি সহ অন্যান্য কাজে নিজের পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতেন। অনলাইনে টেন্ডার জমা পরলেও দায়িত্ব কে পাবেন, তা স্থির করতেন কেরিম নিজেই। সেটা টাকার একটা বড় অংশ প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছে যেত বলে সিবিআই ও ইডির কর্তাদের ধারনা। এরই পাশাপাশি নানুরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া অজয় নদের সব বৈধ ও অবৈধ বালিঘাটের ‘অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক’ নাকি কেরিমই, এমনতাও জানতে পেরেছে সিবিআই ও ইডি। শান্তিনিকেতনে রয়েছে কেরিমের একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি। কোনওটা নামে, কোনওটা বেনামে। বোলপুরের জামবনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রয়েছে দু’টি ফ্ল্যাট। শান্তিনিকেতনের উদয়নপল্লী ও সীমান্তপল্লীর মাঝামাঝি জায়গায় রয়েছে তাঁর প্রাসাদোপম বাড়ি। সেই বাড়ি তৈরিতে নাকি ৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বাড়িতে লাগানো মার্বেল আর গ্লাস নিয়ে আসা হয়েছে বেলজিয়াম থেকে। আলোকসজ্জার খরচ হয়েছে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা।  

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

শেখ শাহজাহানের জামিনের আবেদন খারিজ

রাজ্যে বিশেষ পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে অলোক সিনহা

চাই পুরসভা, চাই পূর্ণাঙ্গ থানা, গলা তুলছে আমোদপুর

নির্বাচন কমিশনকে ‘মেসো’ বলে কটাক্ষ দিলীপের

দইয়ের পর এবার হুগলীর ঘুগনিতে মুগ্ধ রচনা, খেলেন আবার খাওয়ালেনও

‘ভগবানের’ প্রার্থীপদ খারিজের দাবি তৃণমূলের, নেপথ্যে মৃত্যু কামনা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর