এই মুহূর্তে




২০০২ সালের ভোটার তালিকা থেকে উধাও স্বাধীনতার সংগ্রামীর পরিবারের নাম, চাঞ্চল্য দুবরাজপুরে

নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা ভোটার তালিকায় দুবরাজপুর বিধানসভার অন্তর্গত খয়রাশোল গ্রামের ১৩৬ জন ভোটারের নাম উধাও। নির্বাচন কমিশনের আপলোড করা ভোটের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন এলাকার বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী সুরেন্দ্রনাথ সরকারের পরিবারের সদস্যরা। এই ঘটনায় খয়রাশোলে রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বুধবারে খয়রাশোলে গিয়েছিলেন সাংসদ শতাব্দী রায়কে(MP Satabdi Roy) বিষয়টি জানানো হলে তিনি তড়িঘড়ি দলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে বিষয়টি জানান। তালিকায় নাম না থাকা ওই পরিবারগুলিকে আপাতত এসআইআর ফর্ম ফিলাপ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম সুরেন্দ্রনাথ সরকার(Freedam Fighter Surendranath Sarkar)। তিনি ছোটবেলায় স্বদেশী আন্দোলনের জড়িয়ে পড়েন। ১৯২৬ সালে জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক পদে আসীন হয়েছিলেন। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৪ সালে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে জেলা বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন সুরেন্দ্রনাথ বাবু।

বিভিন্ন আন্দোলন করতে গিয়ে একাধিকবার জেল খেটেছিলেন। তার হয়ে মামলা করতে আইনজীবী পাঠিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। সুরেন্দ্রনাথ বাবুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠিয়ে দিয়েছিলেন কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই সব ইতিহাস জ্বলজ্বল করছে স্বাধীনতা সংগ্রামীর বাড়ির দেওয়ালে । অথচ তার পরিবারের সদস্যের নাম বাদ ২০০২ সালের ভোটের তালিকায়। ঘটনায় রীতিমতো হতবাক ছেলে সাম্যসাধক সরকার(Samyasadhak Sarkar)। ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। যারা এই ভুল করেছেন তাদের শাস্তির দাবি যাচ্ছেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সাম্যসাধকবাবু বলেন, বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। আমি নিজে ১৯৫৭ সাল থেকে একটানা ভোট দিচ্ছি। দীর্ঘদিন গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলাম। ১৯৮৩ থেকে ৯৩ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলাম। ১৯৯৩ সাল থেকে টানা ১৫ বছর জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ছিলাম। অথচ আমার ও আমার সরকার পরিবারের সদস্যদের নাম উধাও ভোটার তালিকা থেকে ।আমি অত্যন্ত আশাহত হয়েছি।

বয়স কম থাকলে কমিশনের বিরুদ্ধে আমি অনশনে বসতাম। তবে শুধু সরকার পরিবার নয়, ওই গ্রামের ১৩৬ জন ভোটারের নাম উধাও হয়ে গেছে। এলাকার অপর বাসিন্দার মিলন সৌম মণ্ডল জানিয়েছেন, কয়েক যুগ ধরে এলাকায় বাস করছেন ।কেউ বিদেশে থাকে না ।কেউ বিদেশ থেকে আসেনি। কিন্তু ভোটার তালিকায় নাম না থাকার কারণে তারা রীতিমত চিন্তিত ।অপর বাসিন্দা সুব্রত সাহা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার চুপি চুপি কারচুপি করছে কিনা বুঝতে পারছি না ।গোটা ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত। বুধবার এই ঘটনার কথা জানতে পেরে সাংসদ শতাব্দীর রায় বলেন, কমিশনের আপলোড করা ভোটার তালিকায় ২২ টি পাতা থাকার কথা। কিন্তু দেখছি ১৮ টি পাতা রয়েছে। সে কারণেই বাকিদের নাম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ।

পূর্ণাঙ্গ তালিকা বিএলওদের কাছেও নেই। আমি ঘটনার কথা জানতে পেরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে বিষয়টি জানিয়েছি। এর সমাধান বের হওয়ার না পর্যন্ত ওই পরিবার গুলি ফর্ম ফিলাপ করবে না সেই কথাই বলেছি। তৃণমূলের খয়রাশোলের অঞ্চল সভাপতি সপ্তম গোপ (Saptom Gop)বলেন, এর পেছনে গভীর চক্রান্ত রয়েছে ।বাংলার ভোটার তালিকা নিয়ে ভয়ঙ্কর কেলেঙ্কারি চলছে। বিষয়টি বিডিও থেকে শুরু করে দলের সর্বোচ্চ স্তরে জানানো হয়েছে। জেলাশাসক ধবল জৈন জানিয়েছেন, তালিকা আপলোডে কোন টেকনিক্যাল সমস্যা হতে পারে। আমরা কমিশনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। পূর্ণাঙ্গ তালিকা আপলোড হয়ে যাবে। এ নিয়ে চিন্তার কারণ নেই।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

মমতার এসআইআর ফর্ম নেওয়া নিয়ে ‘ভুয়ো খবর’ ছড়ানোর পিছনে বড় ষড়যন্ত্র!

পাখির চোখ বিধানসভা ভোট, ৭ পুরসভায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে রদবদল

তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে বসে ফর্ম বিলি করছেন BLO, চাঞ্চল্য চাঁচলে

সরকারি স্কুলে প্রার্থনা সভায় গাইতে হবে ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’, বিজ্ঞপ্তি জারি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের

বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহার থেকে কামারহাটি ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’র ডাক বামেদের

বিলাসবহুল জীবন যাপনের জন্য একের পর এক চুরি, চুঁচুড়া থেকে গ্রেফতার ২ অভিযুক্ত

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ