নিজস্ব প্রতিনিধি: অবশেষে রেশন বণ্টন দুর্নীতি(Ration Distribution Scam) মামলায় প্রথম Chargesheet পেশ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা Enforcement Directorate বা ED। এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে এই Chargesheet পেশ করে তারা। ED সূত্রে খবর, Chargesheet-এ রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু সহ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের(Bakibur Rahaman) নাম রয়েছে সেই Chargesheet-এ। এছাড়াও তাতে নাম থাকছে ১০টি ভুয়ো সংস্থার। এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর। রেশন দুর্নীতির টাকা অন্য খাতে বিনিয়োগ করতে কেবল নিজের স্ত্রী-কন্যাই নন, শ্যালক এবং শাশুড়িকেও ব্যবহার করেছিলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক(Jyotipriya Mallik)। রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় অবৈধ উপায়ে পাওয়া টাকাকে বৈধ করতে জ্যোতিপ্রিয় ভুয়ো সংস্থা খুলেছিলেন বলেও দাবি করে ED। এই সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়-‘ঘনিষ্ঠ’ মিল মালিক তথা ED’র হাতে ধৃত বাকিবুরও।
জানা গিয়েছে, ১৬২ পাতার Chargesheet-এ ED’র তরফে দাবি করা হয়েছে, রেশনের দুর্নীতির ঘটনায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তবে তদন্তের শেষে টাকার এই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন ED’র আধিকারিকেরা। এই মামলার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই ২২ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছেন তাঁরা। ED’র দাবি, ভুয়ো সংস্থাগুলির মাধ্যমে মূলত দুর্নীতির টাকা অন্য খাতে বিনিয়োগ করা কিংবা শেয়ার কেনাবেচার কাজ চলত। এমনই তিনটি সংস্থায় বিভিন্ন সময়ে ডিরেক্টর পদে ছিলেন মন্ত্রীর কন্যা এবং স্ত্রী। ED সূত্রে খবর, এই ৩টি সংস্থায় বিভিন্ন সময়ে ডিরেক্টর পদে ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়ের শ্যালক এবং শাশুড়িও। তদন্তে বাকিবুরের নামেও ৮টি ভুয়ো সংস্থার সন্ধান পান তদন্তকারীরা। জ্যোতিপ্রিয় এবং বাকিবুরের নামে থাকা এই ১০টি ভুয়ো সংস্থাই Chargesheet-এ রয়েছে বলে ED সূত্রে খবর।
ED আদালতে জানিয়েছিল, রেশনের চালের টাকা নয়ছয় করেছেন বাকিবুর। তা করার জন্য ভুয়ো কৃষকদের নামে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। বেশ কয়েক জনকে কৃষক হিসাবে দেখিয়ে ওই অ্যাকাউন্ট খুলিয়েছেন বাকিবুর। এই অ্যাকাউন্টগুলিতেই যেত ধানের সহায়ক মূল্য। এমন বহু ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নাকি হদিস পায় ED। প্রসঙ্গত, গত ২৭ অক্টোবর মাঝরাতে ED’র হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। তারও আগে গত ১৩ অক্টোবর গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় বাকিবুরকে। সেই হিসাবে জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হওয়ার ৪৬ দিন পরে আদালতে Chargesheet-এ পেশ করল ED। জানা গিয়েছে Chargesheet-এ সাক্ষী হিসাবে এক IAS আধিকারিকের নামও রয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে এই দুর্নীতির মাধ্যমে বালু তাঁর ঘরে ৩৬ কোটি টাকা ঢুকিয়েছেন।