নিজস্ব প্রতিনিধি: জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রথম আলাপ৷ তারপর সেই আলাপ গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। আর প্রেম পরিনতি পায় বিয়েতে। কিন্তু বিয়ে হলেও একসঙ্গে আর থাকা হল না বেশিদিন। প্রেমিকের সঙ্গে থাকবে বলে হাত ধরে এসেছিল যে বাড়িতে, অভিযোগ, গায়ের রঙ কালো হওয়ায় স্বামী-সহ সেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন চালাত অত্যাচার। তার মাঝেই ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হল ওই বধূ্র দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী থানা এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। এই ঘটনায় মৃত বধূর স্বামী এবং শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ৷
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই বধূর নাম সরোজিনী ঘোষ মণ্ডল৷ তিন বছর আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীর মাজিদা পঞ্চায়েতের বড় ধামাস এলাকার বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়। সরোজিনীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলেটির সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ৷ সেই আলাপ থেকে দুজনের মধ্যে প্রেম হয়। তারপর ওরা পালিয়ে বিয়ে করে৷ কিন্তু মেয়ের গায়ের রঙ কালো সেটা ফেসবুকে ছবি দেখে আগে বোঝেনি ছেলে৷ এর পর বিয়ের পর থেকেই মেয়েটির গায়ের রঙ নিয়ে নানান কথা শনানো সহ খোটা দিতে থাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন৷ এমনকী ছেলেকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেওয়ার কথাও চিন্তাভাবনা করে তার বাড়ির লোক৷ মৃত বধূর পরিবারের তরফে ছেলেটির বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। সরোজিনীর পিসির অভিযোগ, মেয়েটিকে ওরা শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করত৷ ঠিক মতো খেতে দিত না৷ মারধর করত চুলের মুঠি ধরে৷ গায়ের রঙ কালো বলে এইভাবে অত্যাচার চালাত৷ তাছাড়া ছেলেটির অন্য জায়গাতেও সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ করেন মেয়েটির পিসি। সোমবার রাতে সরোজিনীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের খবর পেয়েই থানায় অভিযোগ জানায় মেয়ের পরিবার৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মঙ্গলবার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে কালনা মহকুমা হাসপাতালে৷ পাশাপাশি মেয়ের পরিবারের তরফে দায়ের হয়া অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ স্বামী দেবাঘ ঘোষ ও শ্বশুর বাবলু ঘোষকে গ্রেফতার করে৷ ধৃতদের মঙ্গলবার কালনা আদালতে পেশ করা হয়৷