নিজস্ব প্রতিনিধি: বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও নোবেলজয়ো অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের জমি জট নিয়ে উত্তপ্ত রয়েছে রাজ্য রাজনীতি। অমর্ত্য সেন ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, ওই প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর তরফে আপত্তিকর বিবৃতিও দেওয়া হয়। এই বিবাদের মাঝেই গতকাল তাঁরা আবার চিঠি পাঠায় অমর্ত্য সেনকে। সেই চিঠিতে তাঁকে বলে দেওয়া হয়, আগামী ২৯ মার্চ তিনি বা তাঁর কোনও প্রতিনিধিকে বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন বিল্ডিংয়ের কনফারেন্স হলে হাজির হতে হবে যাবতীয় নথি নিয়ে এবং তাঁদের জানাতে হবে কেন তাঁদের উচ্ছেদ করা হবে না। সেই চিঠি ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে রীতিমত ছিঃ ছিঃ কার পড়ে যায়। এইসবের মাঝেই এদিন তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষ ট্যুইট করে জানিয়ে দিলেন, প্রতীচীর জমি ছিল অমর্ত্যের বাবা আশুতোষ সেনের নামে। সেই জমিই অমর্ত্যর নামে মিউটেশন করে দেওয়া হয়েছে। সেই তথ্য সমর্থন করেছেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়।
প্রতীচীর জমির মিউটেশন নিয়ে বোলপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে শুনানি চলছিল। সেই বিবাদের নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই অমর্ত্য সেনকে গতকাল উচ্ছেদের নোটিস পাঠায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই চিঠিতে অমর্ত্যের বিরুদ্ধে ‘জমি দখল’ করার অভিযোগ তুলে ‘দখলদার উচ্ছেদ আইন’ প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। জমি-বিতর্কের মীমাংসা হওয়ার আগেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এ হেন আচরণে আশ্রমিক ও বিশ্বভারতীর শিক্ষকদের একাংশ এখন রীতিমত ক্ষুব্ধ। প্রতীচীর ঠিকানায় পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ২৪ মার্চ বা তার আগে শো-কজ় নোটিস পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হবে, কেন অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে উচ্ছেদ আইন প্রয়োগ করা হবে না! কারণ তিনি ‘অন্যায় ভাবে’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমেল (শতক) জায়গা ‘দখল’ করে আছেন। চিঠিতে ২৯ মার্চ বিকেলে অমর্ত্যকে সশরীর অথবা তাঁর কোনও প্রতিনিধিকে পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম কর্মসচিব তথা এস্টেট অফিসারের (যাঁর সই রয়েছে নোটিসে) সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে। সেখানেই ওই ‘বিতর্কিত’ জমি নিয়ে শুনানি হবে। কিন্তু এখন যেহেতু সেই জমিই অমর্ত্যর নামে মিউটেশন করে দেওয়া হল তাই উচ্ছেদের নোটিস কার্যত অর্থহীন হয়ে গিয়েছে বলেই আইনজীবী মহলের একাংশের দাবি।