নিজস্ব প্রতিনিধি: হাওড়ার বাঁকড়ায় পঞ্চায়েত অফিসে গুলি চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করল হাওড়া সিটি পুলিশ। ধৃতের নাম শেখ সাজিদ। যিনি বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসার জন্যে গিয়েছিলেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। মুল ঘটনায় হওয়ার আগে শেখ সাজিদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, সেটাই একটু ঝালিয়ে নেওয়া যাক! ভোট বাংলায় প্রতিদিন কিছু না কিছু দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগেই রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মুখ ঢেকে বাঁকড়া-৩ পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন ৩ দুষ্কৃতী, তাঁদের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। আর পঞ্চায়েতের অফিসে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তৎক্ষণাৎ ওই ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে হাওড়া সিটি পুলিশ।
হামলাকারীরা মুলত পঞ্চায়েত প্রধান টুকটুকি শেখকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল, কিন্তু সে প্রাণ বাঁচাতে টেবিলের নিচে লুকিয়ে পড়ে। কিন্তু গুলির ঘটনায় জখম হন টুকটুকি শেখের বাবা-সহ মোট দু’জন। তড়িঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে আসে শেখ সাজিদের। পুলিশ সূত্রের খবর, শেখ সাজিদ ভিন্রাজ্য থেকে দুষ্কৃতী ভাড়া করে ওই হামলা করিয়েছিল। আর তিনি স্থানীয় বিধায়ক কল্যাণ ঘোষের ঘনিষ্ঠ। বিধায়কের ‘প্রতিনিধি’র পরিচয় দিয়েই এলাকায় দৌরাত্ম্য চালাচ্ছেন অভিযুক্ত শেখ সাজিদ। আর শেখ সাজিদের আর একটি পরিচয় হল সে টুকটুকির জামাইবাবু। টুকটুকিকে দিয়ে নিজের মতো করে পঞ্চায়েতে রাজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই রাগেই সে প্রধানের উপর হামলা চালায়। এলাকার মানুষ তাঁর দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। যদিও সাজিদ তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে এটাই দাবি তাঁর। এছাড়াও সাজিদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের কথায়, তৃণমূলে থাকার ‘ফয়দা’ নিয়ে জমি মাফিয়া হয়ে উঠেছিলেন, জমির প্রোমোটিংয়ে টাকা লাগানো থেকে তোলাবাজি, একাধিক অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। আর এই করেই সে কোটিপতি হয়ে উঠেছিলেন। আর তাঁর বিরুদ্ধেই রীতিমতো ক্ষেপেছিলেন তৃণমূলের একাংশ। কারণ পঞ্চায়েতের কোনও পদে না থেকেও কোটি টাকা দুর্নীতি করেছিলেন শেখ সাজিদ। আর পঞ্চায়েত অফিসে গুলির ঘটনার কারণ হিসেবে স্থানীয়রা বলছেন, তৃণমূলের দখলে বাঁকড়া-৩ পঞ্চায়েত প্রধান এবং প্রাক্তন এক সদস্যের মধ্যে গন্ডগোলের জেরেই এই গুলির ঘটনা ঘটেছে। আর প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য শেখ সাজিদের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরাই গুলি চালিয়েছে।এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তৃণমূল দল থেকে সাসপেন্ড করেছে তিন তৃণমূল কর্মীকে।