নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের(Panchayat Election) সময় থেকেই পুরুলিয়ার মাটিতে দাপ্ট শুরু বিজেপির। সেই নির্বাচনে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে থেকে গেলেও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বেশির ভাগ জায়গাতেই ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি(BJP)। ঠিক তার পরের বছর ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনেও পুরুলিয়ার মাটিতে পদ্মঝড় চলেছিল। জেলার একমাত্র লোকসভার আসনটি তো বিজেপির দখলে গিয়েইছিল, সেই সঙ্গে জেলার ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলকে পিছনে ফেলে লিড তুলেছিল বিজেপি। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল(TMC) ৩টি বিধানসভা কেন্দ্র উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। হিসাব মতো আগামী বছর রয়েছে রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। যদিও তা এগিয়ে এনে চলতি বছরের শেষেও করিয়ে নিতে পারে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় একুশের ভোটের পরে এই প্রথমবার পুরুলিয়া(Purulia) গিয়ে সেখানকার মাটি থেকে বিজেপিকে তাড়াবার বার্তা মঙ্গলবার দিয়ে গেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।
এদিন পুরুলিয়ার ব্যাটারি গ্রাউন্ড ময়দানে সভা করতে গিয়ে মমতা তীব্র আক্রমণ শানেন বিজেপিকে। বলেন, ‘প্রায় এক বছর পরে আমি এখানে এসেছি। আমাদের হয়তো কিছু ভুল হয়েছিল সেই কারণে বিধায়ক ও সাংসদ নির্বাচনে আপনারা বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। সেই কারণে আমরা জিততে পারিনি। এখানে আমাদের দলের লোকেরা ভুল করেছে। তাই আমাদের হার হয়েছে। কিন্তু ভোটে জেতার পর থেকে বিজেপির আর দেখা নেই। বিজেপির সাংসদও এখানে আসেন না। তোমার দেখা নাই রে, তোমার দেখা নাই। জেতার পর থেকেই বিজেপি সাংসদ বেপাত্তা। জেতার পর আর বিধায়ক ও সাংসদদের দেখা নেই। সবাই পালিয়ে গিয়েছেন। বিজেপির কোনও দেখা নেই। ভোট এলে উজালা, ভোট কাটলে ঘোটালা। তৃণমূল ভোটে জেতার পর তো আর বাংলায় বিজেপি নেতাদের দেখাই পাওয়া যায় না। নির্বাচন চলে গেলেই এরা উধাও হয়ে যায়। আগামীদিন আমাদের কর্মীদের কোনও কাজ নিয়ে বিরোধীরা যদি অপপ্রচার করে মিথ্যে কথা বলে কুৎসা রটায় তাহলে আমাদের কর্মীদেরও সত্যিটা সামনে তুলে আনতে হবে। সাইকেল চালিয়ে গ্রামে গ্রামে যেতে হবে। মানুষের বাড়িতে গিয়ে দাওয়ায় বসে কথা বলতে হবে। তাঁরা সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে কিনা দেখতে হবে। তাঁদের অভাব অভিযোগের কথা শুনতে হবে।’
এরপরে পরেই মুখ্যমন্তড়ী তীব্র আক্রমণ শানেন বিজেপিকে। বলেন, ‘নোটবন্দির সময় নতুন করে নোট ছাপানোর সময় ভেজাল ৫০০ টাকার নোট চালিয়ে দিয়েছে। আর প্রতিবাদ করলেই ইডি-সিবিআই লেলিয়ে দিচ্ছে। কখনও লালু প্রসাদের বাড়িতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি পাঠানো হচ্ছে, কখনও হেমন্ত সোরেনের বাড়িতে যাচ্ছে সিবিআই। কিন্তু বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনও কথা বলছে না। বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করা উচিত। সবকটাকে জেলে পুরুক সিবিআই। ” কয়লা পাচার, গরু পাচার মামলায় বিরোধী দলের নেতাদেরই টার্গেট করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে বারবার ভয় দেখানো হচ্ছে। ওরা ঠিক করেছে ঘরে ঘরে সিবিআই পাঠাবে। আমি কিন্তু কাউকে ভয় পাই না। বিজেপির মন্ত্রীদের ঘরে ঘরে সিবিয়াইয়ের যাওয়া উচিত। কারও বুকে পাটা নেই প্রতিবাদ করার। আমার হিম্মত আছে কারণ পুরুলিয়া আমাকে লড়াই করতে শিখিয়েছে। বিজেপি সরকার যতই চেষ্টা করো ২০২৪-এ আর হবে না। ২০২৪ নো এন্ট্রি ফর বিজেপি। দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। বিজেপি সরকার ভেজাল সরকার। আগামীদিনে যেন এখান থেকে একটা আসনও বিরোধীরা না পায়।’