নিজস্ব প্রতিনিধি: বাম-কংগ্রেস ও বিজেপিকে চূড়ান্ত ভাবে নিরাশ করে শিলিগুড়িবাসী শহরের পুরনিগমকে তুলে দিয়েছেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে। রাজ্যে পালাবদলের প্রায় এক যুগ বাদে এই প্রথম শিলিগুড়ি পুরনিগমের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল। সেখানে মেয়র হতে চলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। ঘটনাচক্রে যেদিন শিলিগুড়িতে এই জয় এল সেইদিনই উত্তরবঙ্গে পা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকালই মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি পুরনিগমের তৃণমূল বোর্ডের লক্ষ্য কী হবে সেটা জানিয়ে দেন। আর এদিন মঙ্গলবার, তিনি জানিয়ে দিলেন, ‘আমি নিজে পুরবোর্ডের মনিটরিং করব।’
এদিন বেলার দিকে উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের নবনির্বাচিত দলীয় ৩৭জন কাউন্সিলরকে ডেকে পাঠান। সেখানে ছিলেন গৌতম দেবও। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে ফটো তোলার পাশাপাশি সাংবাদিকদের সামনেই জানান, ‘মানুষ যেন কোনও অভিযোগ করতে না পারে। সকলকে সঙ্গে নিয়ে ভাল করে কাজ করতে হবে। কলকাতাকে দেখলে যেমন সকলে বলে, বদলে গিয়েছে, রাজারহাটকে দেখলে বলে, আন্তর্জাতিক স্থান হয়ে গিয়েছে, সেই লক্ষ্য শিলিগুড়িতেও নিতে হবে। বেশি চাহিদা করা যাবে না। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। আমি নিজে পুরবোর্ডের মনিটরিং করব। কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ পেলে আমাকে জানাতে হবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে।’ সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে গৌতম দেবের সঙ্গে তাঁর শিলিগুড়ির উন্নয়ন নিয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা আছে। সেখানেই পুরবোর্ডের মেয়র পারিষদের গঠন ও শিলিগুড়ির সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে কথা হতে পারে৷
এদিন কাউন্সিলরদের সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসী উন্নয়ন পর্ষদের এক বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বুলু চিক বরাইক। কিন্তু সেই বৈঠকে সব থেকে বড় চমক অবশ্যই মালদা উত্তরের বিজেপি বিধায়ক খগেন মুর্মু ও আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকের উপস্থিতি। সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের তরফেই বিজেপির আদিবাসী নেতাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। ডাকা হয়েছিল রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিজ্ঞাকেও। যদিও তিনি কলকাতায় আছেন বলে এদিনের বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। ঘটনা হচ্ছে, রাজ্য বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে তাঁরাই দলের প্রতিনিধি হিসাবে খগেন মুর্মু ও দশরথ তিরকেকে পাঠিয়েছেন। যদিও বৈঠক শেষে দুই নেতাই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সড়কের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁরা বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। আর এখানেই দুই নেতাকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে জল্পনা।