নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আগেই অভিযোগ জমা পড়েছিল শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে আর্জি জানানো হয়েছিল, দ্রুত তাঁর সাংসদ পদ যেন খারিজ করা হয়। এবার সেই আর্জিতেই কিছুটা হলেও সাড়া দিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। দল বিরোধী কাজের অভিযোগে শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিনি লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রিভিলেজ কমিটি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পেশ করবে স্পিকারের দফতরে। তারপরই শিশির অধিকারীর সাংসদ পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে স্পিকারের তরফে তৃণমূল কংগ্রেসকে জানানো হয়েছে।
শিশিরবাবু ২০০৯ সাল থেকে তিনি কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে জিতে আসছেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদানের পরে তৃণমূলের সঙ্গে শিশিরবাবুর দূরত্ব তৈরি হওয়ার পাশাপাশি সম্পর্কও খারাপ হয়। এরপরে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ না দিলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় গিয়েছিলেন। সেদিন মঞ্চের ওপরেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। এরপরই তৈরি হয় বিতর্ক। তৃণমূলের তরফে শিশিরবাবুর বিরুদ্ধে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ তোলা হয়। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার লোকসভার স্পিকারের দ্বারস্থ হয়েছেন শিশিরবাবুর বিরুদ্ধে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ নিয়ে। তার জেরে স্পিকার ওম বিড়লা শিশিরবাবুকে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দেন। সেই সময় শিশিরবাবু স্পিকারের কাছে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান জানাতে এক মাস সময় চেয়ে নেন। কিন্তু সেই সময় অতিক্রান্ত হলেও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি শিশিরবাবু। তারপরেই এবার স্পিকারের তদন্তের নির্দেশ এল। সূত্রে খবর, দিব্যেন্দু অধিকারীকে নিয়েও এবার একই পথে হাঁটা দিতে চলেছে। তাঁর বিরুদ্ধেও এবার দলবিরোধী কাজের অভিযোগ স্পিকারের কাছে জমা দিতে চলেছে বাংলার শাসক দল।
শিশিরবাবুর সাংসদ পদ খারিজ হলে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়বে। এখন যা পরিস্থিতি তাতে সেখানে আবারও ভোট হলে তৃণমূলের জয় সুনিশ্চিত। তাই বিজেপির তরপহে একটা প্রয়াস অবশ্যই চলবে যাতে শিশিরবাবুর পদ যাতে আরও বছর দেড়েক যেন ধরে রাখা যায়। কেননা নিয়মানুসারে ৬ মাসের বেশি কোনও সাংসদ পদ খালি রাখা যায় না। কিন্তু সাধারন নির্বাচন ৬ মাসের সয়মসীমার মধ্যে থাকলে সেই উপনির্বাচন নাও করাতে পারে নির্বাচন কমিশন। যদিও মনে করা হচ্ছে আগামী ৩ মাসের মধ্যেইও শিশিরবাবুর সাংসদ পদ থাকবে কী থাকবে না সেটা লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটি ঠিক করে দিতে পারে। কমিটি যে রিপোর্ট দেবে তার ওপর ভিত্তি করে স্পিকার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন।