নিজস্ব প্রতিনিধি: পলাশিপাড়ার রানিনগরে একই পরিবারের ৩ জনকে গলার নলি কেটে খুনের (Murder) ঘটনা ঘটেছিল। নলি কাটা বাদেও কোপানো হয়েছিল ৩ জনের দেহ। কেন ৩ টে খুন, তা নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা। ঘটনার তদন্তে নেমেছিল পুলিশ (Police)। কিন্তু যা জানতে পারা গেল, তাতে চোখ কপালে উঠেছে তদন্তকারী অফিসার সহ সকলের। পাথর ফেলা নিয়ে বচসাকে কেন্দ্র করেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে কৃষ্ণ মণ্ডল।
রাজোয়ার পরিবারের ৩ জনকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছিল কৃষ্ণ। পুলিশের দাবি, বাড়ির সামনে পাথর ফেলা নিয়ে মাস খানেক আগে রাজোয়ার পরিবারের সঙ্গে বিবাদ হয় কৃষ্ণর। তখনই খুনের হুমকি দিয়েছিল ওই পরিবারের প্রতিবেশী কৃষ্ণ। সোমবার রাতেই কৃষ্ণকে তার বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করে পলাশিপাড়া থানার পুলিশ। আরও জানা গিয়েছে, শিশুদের সামনেই চলে সেই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড। বাড়ির সেজ মেয়ে মালা ও তাঁর বাবা ডোমন, মা সুমিত্রাকে কুপিয়ে ও গলার নলি কেটে খুন করা হয়। ডোমন পেশায় ছিলেন খেতমজুর। রাত ১১ টা নাগাদ চলে এই হত্যাকাণ্ড। মালার স্বামীরও অনুমান তাই। তিনি বলেন, এই ভয়ঙ্কর ঘটনার আগে রাত্রি ১০ টা নাগাদ তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল মালার।
উল্লেখ্য, রানিনগরের তুতবাগান এলাকার বাসিন্দা রাজোয়ার পরিবার। মালা রাজোয়ার ৩ সন্তান নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকতেন। তাঁর বাবা ও মা ডোমন এবং সুমিত্রা। মালার স্বামী কাজের সূত্রে থাকেন হরিয়ানায়। সোমবার রাতে মালার বাপের বাড়িতেই ঘটে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড। রাত প্রায় ১১ টা নাগাদ হানা দেয় দুষ্কৃতীরা হানা দেয় রাজোয়ার পরিবারে। গলার নলি কেটে ও কুপিয়ে খুন করে মালা ও তাঁর বাবা- মাকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ির পাশে মালার দেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। তারপরেই ঘরের ভেতর দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়। নলি কাটা, ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল দেহগুলি। তা দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকা জুড়ে। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পলাশিপাড়া থানার পুলিশ। ৩ টি দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহ গুলি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। ঘটনার তদন্ত চলছে। এই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে বিবাহ বহির্ভূত এক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন মালার স্বামী। তা নিয়ে হয়েছিল অনেক অশান্তি। এই ঘটনায় সেই যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আবার স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, স্বামী বাইরে থাকতেন কিন্তু স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন মালা। প্রেমিকের যাতায়াত ছিল বাড়িতে। স্বামী ও মালার বাপের বাড়ি থেকে আপত্তি জানানো হয়েছিল। তা থেকেও হতে পারে খুন। পুলিশ জানিয়েছে, এই দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে। উল্লেখ্য, প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, স্থানীয় ওই যুবককে বাড়িতে ঢুকতে না বলে দিয়েছিলেন মালার বাবা। সোমবার রাতে কৃষ্ণকে ধরার (Arrest) পর পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে।
