নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি আগে ছিলেন বামপন্থী। সাংসদ হয়েছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক(Forward Block) থেকে। কিন্তু পরিবর্তনের জেরে তিনি এসেছিলেন তৃণমূলে(TMC)। হয়েছিলেন বিধায়ক ও মন্ত্রী। কিন্তু সেই মন্ত্রীত্বের মেয়াদ ২ বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। যদিও তৃণমূলেই থেকেই গিয়েছিলেন তিনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি হেরে গেলেও তাঁকে কোচবিহারের জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের(Coachbehar District Primary School Department) চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। কিন্তু সেই পদেও তিনি এক বছরও পূর্ণ করতে পারলেন না। তার আগেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল সেই পদ থেকে। তিনি হিতেন বর্মণ(Hiten Barman)। যদিও তাঁর এই অপসারণের নেপথ্য কোন কারন রয়েছে তা সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। তবে সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ থেকে বহু শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েব হয়ে যাওয়ার জন্য হিতেনের চেয়ারম্যান পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে গত কয়েক মাস ধরেই তোলপাড় বাংলা। তার মধ্যেই রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী হিতেনকে কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। তাঁরা এই মর্মে চিঠি পাঠায় জেলা শিক্ষা দফতরে। সেই চিঠিতে হিতেনকে অপসারণের কোনও কারণ বলা হয়নি। তবে বলে দেওয়া হয়েছে হিতেনের দায়িত্ব আপাতত সামলাবেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের পরিদর্শক। ঘটনা হচ্ছে, হিতেনের আগে কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান ছিলেন কল্যাণী পোদ্দার। তিনি প্রায় ১০ বছর ওই পদে আসীন ছিলেন। হিতেন সেখানে এক বছরও দায়িত্বে থাকতে পারলেন না। আর এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই উঠেছে প্রশ্ন। কী এমন ঘটল যে রাতারাতি হিতেনকে সরিয়ে দেওয়া হল তাঁর পদ থেকে। কেননা হিতেন এখন আর কার্যত কোনও সরকারি পদেই রইলেন না। তিনি না বিধায়ক, না মন্ত্রী, না কোনও কিছুর সভাপতি।
তবে সূত্রে কিছু ভিন্ন কথাই শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রাথমিক শিক্ষকদের সমস্ত নথিপত্র চেয়ে পাঠায় রাজ্য শিক্ষা দফতর। অন্যান্য জেলার পাশাপাশি কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কাছেও সেই নির্দেশ এসে পৌছায়। কিন্তু সেই নথি পাঠাতে গিয়ে দেখা যায়, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে বহু শিক্ষকের নথিপত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর জেলা বিদ্যালয় সংসদের তরফে প্রাথমিক শিক্ষকদের নথিপত্র চেয়ে স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরই জেলা সংসদের চেয়ারম্যান পদ থেকে হিতেন বর্মনকে অপসারিত করার নির্দেশিকা জারি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অপসারণ নিয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কেউ মুখ খুলছেন না প্রকাশ্যে। মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলা তৃণমূলের ছোট-বড়-মেজ নেতারা। তবে হিতেন জানিয়েছেন, ‘যা ভালো মনে করেছেন। তাই করেছেন। এটা নিয়ে আমার বলার কিছু নেই।’