নিজস্ব প্রতিনিধি: আধুনিক সমাজে এখনও কাঁটার মতো গেঁথে রয়েছে অন্ধবিশ্বাস বা কুসংস্কারের মতো কিছু কার্যকলাপ। সেই সঙ্গে ঘৃণ্য ‘চাহিদা’। আর সেই অন্ধবিশ্বাসের দরুন আবারও প্রাণ গেল বছর সাতেকের এক নাবালিকার। খুনের আগে তাকে করা হয়েছে ধর্ষণ। মূল অভিযুক্তের নাম শিবকুমার। নির্মম ঘটনাটি ঘটেছিল হরিয়ানায়। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে গা ঢাকা দিতে চেয়েছিল সে।
দীপাবলির রাতে শিশু কন্যার বলি দিলে তান্ত্রিক হিসেবে সিদ্ধি লাভ সম্ভব। এমনই ধারণা কাঠমিস্ত্রি শিবকুমারের। তাই আগে থেকে শিশুকন্যার খোঁজও নিয়ে রেখেছিল শিবকুমার। কালীপুজোর দিন অমাবস্যার রাতে শিবকুমার হানা দেয় শিশুকন্যার বাড়ি। তারপর ওই অভিযুক্ত শিশুকন্যার বাবার হাতে মদের বোতল ধরিয়ে দেয়। বাবা নেশায় বেহুঁশ হতেই তাঁর মেয়েকে ডালভাজা দেওয়ার নাম করে ছাদে নিয়ে যায় কাঠমিস্ত্রি। এরপর ধর্ষণের চেষ্টা করতেই নাবালিকা চিৎকার করে ওঠে। লোক জানাজানি হওয়ার ভয়ে ওই কাঠমিস্ত্রি নাবালিকাকে ছাদ থেকে ছুঁড়ে নিচে ফেলে দেয়! ওই কিশোরী গোবরের ট্যাঙ্কে পড়ে যায়। গোবরের মধ্যে হাবুডুবু খাওয়া শরীরটা যখন নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে ঠিক তখনই কাঠমিস্ত্রি ওই শিশুকন্যাকে ওপরে তুলে আনে। এরপর নির্জন জায়গায় কাঠমিস্ত্রি শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে। এমনকি ওই শিশুকন্যার গলা টিপে খুন করে শিবকুমার।
দীপাবলির রাতে মদের নেশায় বেহুঁশ বাবা মেয়ের আর্তনাদ শুনতেই পেল না। দীর্ঘক্ষণ বাড়িতে মেয়েকে না দেখতে পেয়ে মা ঘরের চারপাশে তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকেন মেয়েকে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সেই রাতেই মৃত মেয়ের দেহের সন্ধান পান প্রতিবেশীরা। এরপর ওই নাবালিকার বাবা বিষয়টি অনুমান করতে পেরে থানায় কাঠমিস্ত্রি শিবকুমারের নামে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে হরিয়ানার পানিপথের পুলিশ। যদিও ততক্ষণে চম্পট দিয়েছিল কাঠমিস্ত্রি। তবে অবশেষে ধরা পড়ে কালপ্রিট।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারই হাওড়াগামী কালকা মেলে চেপে অভিযুক্ত পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু হাওড়া জিআরপির ওসি সিদ্ধার্থ রায়ের তৎপরতায় হাওড়া রেল ষ্টেশনে সাদা পোশাকের একটি বিশেষ দল পাঠানো হয়। ওই দলের এএসআই তুষারকান্তি সাহার নেতৃত্বে কালকা মেল থেকেই গ্রেফতার (ARREST) করা হয় অভিযুক্তকে। তারপর তাকে তুলে দেওয়া হয় হরিয়ানা পুলিশের হাতে। কন্যাকে হারিয়ে কান্নতে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার।