নিজস্ব প্রতিনিধি: ৩ মাস আগে করানো স্ক্যানের রিপোর্টে অস্বাভাবিক কিছুই আসেনি। তাই নিশ্চিন্তেই ছিলেন প্রসূতির পরিবার। কিন্তু এখন ফের স্ক্যান করাতে গিয়ে বড় বিপদ ধরা পড়ল রিপোর্টে। সেখান্নে সাফ জানানো হয়েছে, গর্ভস্থ শিশুর জন্মগত ত্রুটি তো আছেই, সেই সঙ্গে এই শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে মায়ের জীবনহানীও ঘটতে পারে। অথচ ৩ মাস আগে যখন এই একই ল্যাব থেকে স্ক্যান করানো হয়েছিল তখন কিন্তু এই ধরনের কোনও বিপদের আঁচ মেলেনি। এখন তার আঁচ মিলতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন প্রসূতির পরিবারের সদস্যরা। তার জেরেই তাঁরা জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে ওই ল্যাবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের লিখিত অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি প্রসূতির জীবনরক্ষার অনুরোধও জানানো হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট(Balurghat) শহরে।
জানা গিয়েছে, বালুরঘাট থানার জলঘর অঞ্চলের পলাশডাঙা(Palashdanga) গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তাফা মন্ডলের স্ত্রী জিন্নাতুন খাতুন সন্তানসম্ভবা হলে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। সেখানকার চিকিৎসার পরামর্শে মোস্তাফা তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে গত নভেম্বর মাসের ২২ তারিখ বালুরঘাট শহরের হাসপাতাল মোড়ে একটি ল্যাবে যান গর্ভস্থ সন্তানের স্ক্যান(Scan) করানোর জন্য। চিকিৎসকেরা মূলত সেই সময় ওই স্ক্যান করবার পরামর্শ দিয়েছিলেন এটা জানতে যে গর্ভস্থ সন্তানের জন্মগত কোনও ত্রুটি আছে কিনা তা জানতে। কেননা এই ধরনের ত্রুটি নিয়ে বাচ্চারা জন্মানোর সময় মায়ের জীবন বিপন্ন করে তোলে। সেই কথা মাথায় রেখেই এই স্ক্যান করাবার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসক(Doctor)। সেই স্ক্যানের রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল গর্ভস্থ সন্তান ঠিকথাক আছে। তেমনই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল ওই ল্যাব থেকে। কিন্তু চলতি মাসে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকেরা আবার জিন্নাতুন খাতুনের ইউএসভি(USV) করাতে বলেন। মুস্তাফা ফের স্ত্রীকে নিয়ে ওই ল্যাবেই যান ও সেই পরীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়, বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি তো রয়েইছে সেই সঙ্গে যে কোনও মুহুর্তে মায়ের জীবনহানীও হতে পারে।
এই রিপোর্ট দেখেই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা মুস্তাফাকে পরামর্শ দিয়েছেন দ্রুত যেন জিন্নাতুন খাতুনকে বড় কোনও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা করাতে। নাহলে তাঁর প্রাণহানী হতে পারে। কিন্তু সেই চিকিৎসা করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই মোস্তাফার। এখন তাঁর দাবি, ওই বেসরকারি ল্যাবে ঠিক মতন স্ক্যান করা হয়নি। হলে আগেই জিন্নাতুনের গর্ভপাত করিয়ে দেওয়া যেত যাতে তাঁর প্রাণ সংশয় না হয়। কিন্তু এখন আর কিছুই করা যাবে না। চোখের সামনেই তাঁর স্ত্রী মারা যেতে পারেন অসহায় অবস্থায়। এই অবস্থায় মোস্তাফা জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন যাতে প্রশাসন ওই ল্যাবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয় ও তাঁর স্ত্রীর প্রাণ বাঁচানোর জন্য যেন প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন।