নিজস্ব প্রতিনিধি: টানা ছ’দিনের লুকোচুরি শেষ অবশেষে ধরা পড়ল রয়্যাল বেঙ্গল। গত বুধবার থেকে কুলতলির জঙ্গলে শেখপাড়া ও ডোঙাজোড়াতে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল বাঘটি। যাকে ধরতে সিভিক পুলিশ থেকে শুরু করে রাজ্য পুলিশ, বনকর্মী থেকে গ্রামবাসীরা নানা ফাঁদ পেতেছিল। জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছিল গোটা শেখপাড়ার জঙ্গল। র্যাফ নামানো হয়েছিল গ্রামে, জারি ছিল ১৪৪ ধারা। বাঘের অবস্থান জানতে ব্যবহার করা হচ্ছিল ড্রোন ও স্পিড বোটে চলছিল নজরদারি। গতকাল রাত থেকেই দমকল বাহিনীর তরফে হোশ পাইপে জঙ্গলের ভিতরে ছোড়া হচ্ছিল জল। অবশেষে লুকোচুরি থামিয়ে মঙ্গলবার সকালেই জঙ্গলের ভিতর পাতা খাঁচাতে নিজের থেকেই প্রবেশ করে দক্ষিণরায়। তাকে লক্ষ্য করে দুটি ঘুমপাড়ানি ইনজেকশন ছোড়া হয়। যার একটি পায়ে ও অপরটি কাঁধে লাগে। তারপরেই নিজের থেকেই খাঁচা বন্দি হয় রয়্যাল বেঙ্গল।
পূর্ণবয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে ঘিরে আতঙ্ক ছিল সপ্তাহ ভর। বন কর্মীরা বাঘের অবস্থান জানলেও বাগে আনতে পারছিল না দক্ষিণরায়কে। সবরকম চেষ্টা করা হলেও বাঘ ছিল অধরাই। তাই ক্ষোভ বাড়ছিল এলাকাবাসীদের। তবে মঙ্গলের সকালেই দুটি ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয়ে খাঁচা বন্দি বাঘ। আপাতত বন কর্মীরা সেই বাঘটিকে কুলতলির শেখপাড়ার জঙ্গল থেকে নদী পথে ঝড়খালি নিয়ে যাওয়ার আগে কুলতলিতেই চিকিৎসা হবে বাঘটির। তারপর ঝড়খালির জঙ্গলে ছাড়ার আগে ক্ষুধার্ত বাঘটিকে খেতে দেওয়া হবে। তারপরেই সুন্দরবনের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে, বলে জানা গিয়েছে।
এই বিষয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, ‘এটা একটা বড় সাফল্য। আমরা প্ল্যান করেছিলাম আজকে ঠাণ্ডা জল দিয়ে বাঘকে ভেজাতাম। কিন্তু তার আগেই খাঁচা বন্দি হয়েছে বাঘটি। একটাও মানুষের গায়ে আঘাত লাগেনি, এটা সাফল্য আমাদের। এরপর বাঘটির চিকিৎসা করা হবে, ওর লেজ ঠিক আছে কিনা, শরীরের কোথাও আঘাত পেয়েছে কিনা দেখা হবে। তারপরেই জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।’