নিজস্ব প্রতিনিধি: মতুয়া প্রশ্নে বিজেপিতে বিভাজন কী ক্রমশ চওড়া হচ্ছে? এই প্রশ্নটা উঠেই গেল। ঘটনাচক্রে মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করার কথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের। সেই সাক্ষাতের দিকে তাকিয়ে বনগাঁর মতুয়া সমাজ। কিন্তু সেই সাক্ষাৎ নিয়ে বঙ্গ বিজেপির একাংশ যে ক্ষুব্ধ সেটা এদিন বুঝিয়ে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি রীতিমৎ নাম না করেই তোপ দেগেছেন শান্তনুকে লক্ষ্য করে। তবে বনগাঁ এলাকার বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, যে কোনও কারনেই হোক বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আর মতুয়াদের নিয়ে সেভাবে আগ্রহী নয়। তাই নানা প্রশ্নেই তাঁরা এখন মতুয়া মহলের ক্ষোভকে এড়িয়ে যাচ্ছেন যার জেরে মতুয়াদের সঙ্গেও বিজেপির একটা দূরত্ব তৈরি হতে শুরু হয়ে গিয়েছে। এই দূরত্ব বেশিদিন থাকলে মতুয়া সমাজের বিধায়ক থেকে সাংসদরা যে দলবদলের পথে হাঁটা দেবেন না সেটা জোর গলায় কেউ বলতে পারছেন না।
সোমবার রাতেই শান্তনু ঠাকুর বিজেপির একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেড়িয়ে যান। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, বিজেপির রাজ্য কমিটিতে মতুয়া প্রতিনিধিত্ব পর্যাপ্ত না থাকায় দলের একাংশের উপর ক্ষুব্ধ তিনি। এর পাশাপাশি বনগাঁর জেলা সভাপতি নিয়োগের বিষয়েও ক্ষোভ রয়েছে সাংসদের। এদিনই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করছেন। অনুমান করা হচ্ছে সেখানে তিনি এই বিষয়ে তাঁর নিজের ক্ষোভের কথা জানাতে পারেন। তবে তিনি যে এখনই এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করছেন না সেটা পরিষ্কার। তবে এটাও ঠিক মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পরেও যদি সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে কিন্তু পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নিতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলায় বিজেপির টিকিটে যে সব বিধায়কেরা জয়ী হয়েছেন মতুয়া প্রভাবিত এলাকাগুলি থেকে সেই সব বিধায়কেরা দল বদল করলেও করতে পারেন।
তবে শান্তনুরভ এই মোদি সাক্ষাৎ ভাল চোখে দেখছেন না দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সকালে একটি চা চক্রে যোদ দিতে এসে তিনি নাম না করেই শান্তনুকে এখাত নিয়েছেন। বলেছেন, ‘পদপ্রাপ্তি নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হতে পারে। তবে দলের সমস্যা দলের অন্দরেই মেটানো হবে। আমাদের দল একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। কেবলমাত্র ব্যক্তিগত স্বার্থ দেখে দল কাজ করে না। বিজেপিতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ নিয়েও বিজেপিতে রাজনীতি হয় না।’ শোনা যাচ্ছে মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎপর্ব মিটিয়েই কলকাতায় ফিরবেন শান্তনু। এরপর এদিন রাতেই বনগাঁতে তিনি একটি বৈঠক করতে পারেন মতুয়া সম্প্রদায়ের কিছু বিশিষ্ট প্রতিনিধিদের নিয়ে। সেখানে বিজেপির বেশ কয়েকজন বিধায়কও থাকতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। সেই বৈঠকের দিকে কিন্তু এখন তৃণমূলেরও নজর থাকছে। কেননা মনে করা হচ্ছে এই বৈঠক থেকেই কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত উঠে আসতে পারে।