নিজস্ব প্রতিনিধি: সকাল থেকে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল এলাকায়। চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতেও। কেউ বলছে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার(Arrest) করেছে, কেউ বা দাবি করছিল গ্রেফতারি এড়াতে তিনি গা ঢাকা(Missing) দিয়েছেন। সেই জল্পনা আরও গতি দেয় দুটি ঘটনা। এক তাঁর বাড়ি ছিল দীর্ঘক্ষণ তালাবন্দ, আর দুই, তাঁকে মোবাইল ফোনেও পাওয়া যাচ্ছিল না। যদিও সব জল্পনা কল্পনায় জল ঢেলে তিনি নিজেই জানিয়ে দিলেন, না কেউ তাঁকে গ্রেফতার করেছে না তিনি গ্রেফতারি এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ব্যক্তিগত কাজে তিনি কলকাতায় এসেছেন। ফোনের টাওয়ার সমস্যার দরুন হয়তো তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না। কেননা তিনি তখন কলকাতার পথে রাস্তায় ছিলেন। আর তাঁর ছেলে বাজারে গিয়েছিল বাড়িতে তালা লাগিয়ে। তিনি নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক(Tehatta MLA) তাপস সাহা।
সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতিদমন শাখার হাতে শনিবার গ্রেফতার হয়েছেন প্রবীর কয়াল সহ তার দুই সঙ্গী শ্যামল কয়াল এবং সুনীল মণ্ডল। প্রবীর আবার তাপসের(Tapas Saha) আপ্তসহায়ক। যদিও তাপস এখন দাবি করছেন, প্রবীর তাঁর বাড়িতে আসত ঠিকই, কিন্তু সে তাঁর আপ্তসহায়ক ছিল না। রবিবার সকাল সওয়া ৯টা নাগাদ নদিয়ার পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকার কড়ুইগাছি গ্রামে তাপসবাবুর বাড়ির সামনে তিনটি সাদা স্করপিও এসে দাঁড়াতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গাড়িগুলি থেকে কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাপসের বাড়িতে ঢোকেন। বিধায়কের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথোপকথনের পর সেই গাড়িগুলির একটিতে উঠে বসেন তাপস। এরপরেই এলাকায় রটে যায় পুলিশ এসে তুলে নিয়ে গিয়েছে তাপসবাবুকে। একই সঙ্গে ঘটনার পর থেকে তাপসবাবুর বাড়িও ছিল তালাবন্ধ। তার জেরে তৃণমূলের(TMC) স্থানীয় নেতারাও তাপসের বাড়ির সামনে ভিড় করতে থাকেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ফোনে তাপসবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কেউই যোগাযোগ করে উঠতে পারেননি। বার বার তাপসবাবুর মোবাইল নম্বরে সুইচড অফ শোনা যাচ্ছিল। এর মধ্যে আবার রটে যায় গ্রেফতারি এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন তেহট্টের এই বিধায়ক।
তার জেরে তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করেন। কিন্তু সেখান থেকে পুলিশ জানিয়ে দেয়, এ ব্যাপারে কিছুই জানা নেই তাঁদের। ততক্ষণে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম দাবি করে, আর্থিক প্রতারণা-কাণ্ডে তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যদিও প্রায় চার ঘণ্টা বাসে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা তাপসবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়। তখনই তিনি জানান, ‘এ ধরনের জল্পনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। না আমাকে পুলিশে ডেকেছে, না আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। নিজের গাড়িতে করে ব্যক্তিগত কাজে কলকাতা যাচ্ছি। যাওয়ার আগে সকালে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি কল্লোল খাঁ-র সঙ্গে দেখা করে কলকাতায় রওনা হই। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতেই কলকাতায় এসেছি। আমার বিরুদ্ধে চলা তৃণমূলেরই একাংশের ষড়যন্ত্র নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাব। আমার বাড়ি তালা বন্ধ ছিল কারণ আমার ছেলে সাগ্নিক সাহা দরজায় তালাবন্ধ করে বাজারে গিয়েছিল।’