নিজস্ব প্রতিনিধি: সম্পত্তি হাতাতে দাদাকে সুপারি কিলার দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ২৫ হাজার টাকার চুক্তিতে সুপারি কিলার ভাড়া করে এই খুন করা হয় বলে তদন্তে উঠে এসছে। হুগলি জেলার শ্রীরামপুরের রাজ্যধরপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে মৃতের ভাই-সহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম গৌতম দাস। ৫৮ বছর বয়স তাঁর। হুগলি জেলার শ্রীরামপুরের রাজ্যধরপুর পঞ্চায়েত এলাকার দাসপাড়ার বাসিন্দা তিনি। গত বৃহস্পতিবার একটি পুকুরে গৌতম দাসের মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এর পর খবর দেওয়া হয় পিয়ারপুর ফাঁড়িতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পিয়ারপুর ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায়। দাদার মৃত্যু রহস্যের কিনারা করতে শ্রীরামপুর থানার দ্বারস্থ হন নিহত গৌতম দাসের ছোট ভাই উৎপল দাস। থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এর পর ঘটনার তদন্তে নেমে গৌতম দাসের খুনের রহস্য উন্মোচন করেন তদন্তকারীরা। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে গৌতমকে খুন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় এই খুনের পেছনে রয়েছে তাঁর ভাই উজ্জ্বল দাস। সম্পত্তির লোভে সুপারি কিলার দিয়ে উজ্জ্বল তার দাদা গৌতমকে খুন করেছে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।
এই খুনের ঘটনায় পুলিশ কৃষ্ণ সরকার নামে এক যুবককে প্রথমে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসে নিহত গৌতমের ভাই উজ্জ্বলের নাম। এর পর উজ্জ্বলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে পুলিশ, কৃষ্ণকে সুপারি হিসাবে ভাড়া করা হয়েছিল এই খুনের জন্য। এমনকি কৃষ্ণের সঙ্গে উজ্জ্বলের ২৫ হাজার টাকার রফা হয় খুনের জন্য। প্রথমে ৫ হাজার টাকা কৃষ্ণকে দেয় অর্জুন, বাকি টাকা পরে দেবে বলে জানায়।
জানা গিয়েছে, গৌতম দাসেরা পাঁচ ভাই এবং এক বোন। ভাইদের মধ্যে একমাত্র উজ্জ্বল দাস বিবাহিত। দু বছর আগে এক ভাই মারা গিয়েছেন। বাকি তিন ভাই, বোন এবং বোনের স্বামী একসঙ্গে থাকেন। দিল্লি রোডের পাশে গৌতম দাসদের পারিবারিক জমি এবং সম্পত্তি রয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য কয়েক লাখ টাকা। সেই সম্পত্তি হাতাতে দাদাকে উজ্জ্বল খুন করে বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১২টা নাগাদ গৌতমকে গলা টিপে খুন করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। এর আগে অভিযুক্ত উজ্জ্বল দাস দু’বার তার ভাইদের না জানিয়ে জমি বিক্রি করেছিল। জমি বিক্রির সেই টাকা নিজেই ভোগ করেছিল। যার পর থেকে পরিবারের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। এর পর দাদাকে একেবারের মত সরিয়ে দিতে খুনের ছক কষে উজ্জ্বল। এই খুনের ঘটনায় উজ্জ্বলের ভগ্নিপতি বিজয় মণ্ডলও শামিল বলে জানিয়েছে অভিযুক্ত বিজয়।