নিজস্ব প্রতিনিধি: ভারত সরকার(India Government) দেশে রেলপথের মাধ্যমে দ্রুত পণ্য পরিবহণ করাতে ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলার লাইনে মালগাড়ির সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি নতুন নতুন শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে The Eastern Dedicated Freight Corridor তৈরির কাজে হাত দিয়েছে। উত্তর প্রদেশের(Uttar Pradesh) খুর্জা(Khurja) থেকে বাংলার(West Bengal) ডানকুনি(Dankuni) পর্যন্ত ডবল লাইনের এই করিডরের মোট দৈর্ঘ্য ১৪০৯কিমি। এর মধ্যে বাংলায় থাকছে ২০৩কিমি, ঝাড়খণ্ডে থাকবে ১৯৫কিমি, বিহারে থাকছে ২৩৯কিমি এবং উত্তরপ্রদেশে থাকছে ৭৭২কিমি। কিন্তু এখন রেলমন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেই ফ্রেট করিডর ডানকুনি অবধি নিয়ে যাওয়া হবে না। তা পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের অন্ডাল(Andal) অবধি নিয়ে এসে শেষ করিয়ে দেওয়া হবে। পণ্য পরিবহণ, অন্ডালের ভৌগোলিক গুরুত্ব, উত্তর-পূর্ব ভারতের কথা মাথায় রেখে প্রাথমিক ভাবে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন বিনিয়োগ যত কমই হোক না কেন, জমি মিলবে দ্রুত
পূর্ব রেলের আধিকারিকদের দাবি, পণ্য পরিবহণের বেশির ভাগটাই অন্ডালকে কেন্দ্র করে হয়। তাই আপাতত ডানকুনির বদলে অন্ডাল পর্যন্ত প্রকল্পটি হবে বলে রেল মন্ত্রক জানিয়েছে। ডানকুনির পরিবর্তে অন্ডালকে বেছে নেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে মূলত চারটি কারণ। প্রথমত, পণ্য পরিবহণের পরিমাণ। পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকে রেলপথে বাঁকুড়ার মেজিয়া, বীরভূমের বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, উত্তরবঙ্গ, উত্তর-পূর্ব ভারতে কয়লা পরিবহণ হয়। ডিএসপি, ইস্কো ও ক্ষুদ্র ইস্পাত কারখানাগুলির সামগ্রী দেশের নানা প্রান্তে পাঠানো ও বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঁচামাল নিয়ে আসার কাজও মালগাড়ির মাধ্যমে হয়। পাশাপাশি, পশ্চিম বর্ধমান থেকে সিমেন্ট পাঠানো হয় রাজ্য ও দেশের নানা প্রান্তে। ডানকুনি থেকে এত বেশি পরিমাণ পণ্য পরিবহণ করা হয় না। দ্বিতীয়ত, অন্ডালের ভৌগোলিক অবস্থানটি গুরুত্বপূর্ণ। এটির গা দিয়ে গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে যাওয়া ১২৬৯.৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে, সড়কপথেও দেশের নানা প্রান্ত থেকে অন্ডালে দ্রুত আসা-যাওয়া সম্ভব। যাত্রিবাহী ট্রেনের লাইনে পণ্য আমদানি-রফতানির জন্য অনেক সময় লাগে। পণ্য করিডর হলে, অনেকটাইসময় বাঁচবে।
আরও পড়ুন আলুওয়ালিয়ার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ বিজেপি নেতার
তৃতীয়ত, উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছনোর অন্যতম প্রধান মাধ্যম অন্ডাল। অন্ডাল থেকে সাঁইথিয়া-রামপুরহাট হয়ে সেখানে দ্রুত পৌঁছনো যায় সড়ক ও রেল, উভয় পথেই। ফলে, শিল্প-সামগ্রীর পাশাপাশি, জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত দেশের সে প্রান্তে অন্ডাল হয়ে রসদ পৌঁছনো যাব। চতুর্থত, অন্ডাল স্টেশন থেকে সড়ক পথে মাত্র ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর থাকায় দক্ষিণ ও পূর্ব-সহ ভারতের নানা প্রান্তের শিল্পোদ্যোগীদের আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে না। অন্ডাল অবধি করিডর ঘোষণার পরে প্রচুর শিল্পপতি, শিল্প সংস্থা থেকে ব্যাপক সাড়া মিলেছে বলেও রেলের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।