নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে শিল্প গড়তে আগ্রহী শিল্পোদ্যোগীরা(Industrialists) যাতে দ্রুত জমি পান তার জন্য এবার বড় পদক্ষেপ করল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার(Mamata Banerjee)। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিনিয়োগের পরিমাণ যত কমই হোক না কেন, কোনও শিল্পসংস্থা রাজ্য সরকারের কাছে জমির(Land) জন্য আবেদন করলে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ৩ দিনের মধ্যে সেই সংক্রান্ত Offer Letter দিয়ে দিতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট সংস্থা সরকারকে টাকা মিটিয়ে দিলে তার ১২ দিনের মধ্যে সেই জমির Possession Certificate বা ভোগদখলের অনুমতিপত্র দিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই তার দায় নেবে। প্রয়োজনে ওই কাজের দায়িত্বে থাকা অফিসারকে আর্থিকভাবে জরিমানাও করতে পারে রাজ্য সরকার। ছোট শিল্পের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জমি ও অন্যান্য পরিষেবার ব্যাপারেও একই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য।
আরও পড়ুন বাংলার শিল্পোন্নয়নের অংশীদার হতে চাইছে Asian Development Bank
কর্মসংস্থানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পাখির চোখ’ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প। তাই এই ধরনের শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করতে বিন্দুমাত্র পিছু পা হচ্ছে না রাজ্য সরকার। বাংলায়(Bengal) বড় শিল্পের জমির ব্যাপারে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিষেবা দেওয়ার রীতি চালু আছে। কিন্তু ক্ষুদ্র বা কম অঙ্কের লগ্নির ক্ষেত্রে সেই সুবিধা ছিল না। ক্ষুদ্র শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজ্যে রয়েছে প্রায় শ’খানেক শিল্পতালুক। আরও বেশ কয়েকটি তালুক চালু হতে চলেছে শীঘ্রই। এগুলি দেখভালের ভার রয়েছে রাজ্য ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম এবং রাজ্য শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের হাতে। সেই তালুকগুলির কয়েকটিতে শিল্প গড়ার জন্য জল, রাস্তা, বিদ্যুৎ, নিরাপত্তা প্রভৃতি পরিকাঠামো গড়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটিতে গড়া হয়েছে শেড সহ অন্যান্য পরিকাঠামো। এখানে শিল্প গড়ার জন্য আবেদন করতে পারে ছোট শিল্প সংস্থা। নামমাত্র দামে জমি বা শেড পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা বঙ্গ বিজেপিতে
ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে, জমি সংক্রান্ত কোনও আবেদন পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে ক্ষুদ্রশিল্প দফতরে সুপারিশ করা হবে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য। এই কাজ করবেন সংশ্লিষ্ট শিল্পতালুকের ম্যানেজার। একইভাবে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ৩ দিনের মধ্যে Offer Letter এবং জমির দাম মেটানোর ১২ দিনের মধ্যে জমি ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে। অন্যদিকে, শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম শিল্পের জমি তুলে দেবে সর্বাধিক ৬০ দিনের মধ্যে। বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দিতে হবে ৩০ দিনে। ‘অকুপেন্সি’ বা জমি ব্যবহারের অনুমোদনের সময়সীমা সর্বাধিক ৮ দিন। এই পরিষেবা দেবেন নিগমের সচিব বা অন্যান্য কর্তা। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য আবেদন পাঠানোর সর্বোচ্চ সময়সীমা ৩০ দিন। অস্থায়ীভাবে অফার লেটার দেওয়ার সীমা ৭ দিন। টাকা মেটানোর সাতদিনের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে ভোগদখলের অনুমতি।
আরও পড়ুন আলুওয়ালিয়ার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ বিজেপি নেতার
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার জন্য আগেই চালু হয়েছে পরিষেবা অধিকার আইন। সেই আইন অনুযায়ী কোনও সংস্থা বা নাগরিক নির্দিষ্ট সময়ে পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ করতে পারেন। তিনি কাকে, বা কোন পদাধিকারী অফিসারকে অভিযোগ করবেন, তা ঠিক করে দিয়েছে দফতর। সেখানে সুরাহা না হলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানাতে পারেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানার মুখে পড়তে পারেন আধিকারিক। এতদিন পর্যন্ত ছোট শিল্পের ক্ষেত্রে পরিষেবা দেওয়ার জন্য কোনও সময়সীমা ছিল না। এবার দফতর নিজেই সময় নির্দিষ্ট করে দিল।