নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১৮ সালে যে জেলাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বড়সড় জয় দিয়ে বঙ্গ বিজেপির দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছিল, সেই পুরুলিয়া জেলাতেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরে একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হচ্ছে বিজেপির। সৌজন্যে অবশ্যই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তা৬রাই বিজেপিকে ধাক্কা দিয়ে একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করছে পুরুলিয়ার বুকে। আর এই ক্ষমতার হাতবদলের জেরে গেরুয়া শিবির এখন চাপে পড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন ও ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য যা রীতিমত অশনিসঙ্কেত হয়ে উঠেছে বিজেপির কাছে। এখন যে ঘটনাকে ঘিরে বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি ছড়িয়েছে তা হল রঘুনাথপুর-২ ব্লকের নীলডি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা তাঁদের হাতছাড়া হওয়ায়।
২০১৮ সালের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে নীলডি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৫টি আসনে জিতে বোর্ড গড়েছিল। তৃণমূল পেয়েছিল ৪টি আসন। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপির নির্বাচিত সদস্যরা তলে তলে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে। তার জেরেই গত মাসে নীলডি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল। চলতি মাসের ১২ তারিখ সেই অনাস্থার ওপর ভোটাভুটি হয় যেখানে ৬-৩ ভোটে হেরে যান পঞ্চায়েত প্রধান তথা বিজেপি। এরপরেই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রমণী মুর্মু সহ আরও এক বিজেপি সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। এবার সেই রমণী মুর্মুকেই পঞ্চায়েত প্রধান করে নীলডি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়তে সক্ষম হল তৃণমূল।
পঞ্চায়েত প্রধান হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পরে এদিন রমণী মুর্মু জানিয়েছেন, ‘প্রধান এলাকার কোনও উন্নয়ন করছিল না। এলাকার মানুষকে সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছিল। সেই কারনেই দলবদল করেছি। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’ যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এই ঘটনার পিছনে শাসক দলের ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে দলবদল করানোর চাপকেই দায়ী করেছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপির অভিযোগকে খণ্ডন করে বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই যোগদানের কারনকে তুলে ধরছে।