নিজস্ব প্রতিনিধি: রবি ঠাকুর বলে গিয়েছেন, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চল রে।’ তাই রাজ্যের ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও আর কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকতে নারাজ। রাজ্যের একাধিক এলাকায় নদীবাঁধ মেরামতি থেকে গঙ্গা-পদ্মার ভাঙন রোধ—বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই সদুত্তর আসেনি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের তহবিল থেকেই নতুন নদীবাঁধ তৈরি(New River Bank Setup), পুরনো বাঁধ মেরামতি(Old River Bank Repairment) এবং সেচযোগ্য জমির পরিমাণ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতার সরকার। আর এই সবকিছুর জন্য প্রায় ৮৮০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্য সরকার(West Bengal State Government)। কাজ শুরু হয়ে যাবে পুজোর পরেই। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের মধ্যে সবক’টি প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, সম্প্রতি বাঁধ মেরামতি ও বিভিন্ন সেচ প্রকল্প নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, দফতরের প্রধান সচিব প্রভাত মিশ্র সহ অন্যান্যরা। কোন কাজগুলি অগ্রাধিকার সহকারে করা দরকার, তার একটি তালিকা তৈরি করা হয় সেখানে। তালিকায় রয়েছে মুর্শিদাবাদ, মালদা, নদিয়া, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক নদীবাঁধ তৈরি এবং মেরামতি। নেদারল্যান্ডের প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুন্দরবন(Sundarban) অঞ্চলের বেশ কিছু জায়গায় বাঁধ নির্মাণ এবং গঙ্গা-পদ্মা ভাঙন রোধের কাজও রয়েছে এই তালিকায়। এর পাশাপাশি ভূটানে হওয়া বৃষ্টির জল নেমে এসে উত্তরবঙ্গের যেসব এলাকায় বন্যা ঘটায়, সেই এলাকার প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে পর্যালোচনা বৈঠকে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে অনেকগুলি প্রকল্পের ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্যের অর্থদফতর। প্রকল্প শেষের সময়সীমা বেঁধে দিয়েই দরপত্র ডাকা হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দরপত্র ডাকার পরবর্তী প্রশাসনিক প্রক্রিয়াগুলি দুর্গাপুজোর আগেই শেষ হয়ে যাবে। ফলে পুজো মিটলেই পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। এই ৮৮০ কোটি টাকার পুরোটাই খরচ করা হবে রাজ্যের কোষাগার থেকে। ভাঙন কবলিত এলাকার আর কোনও বসবাসকারী যাতে ভিটেহারা না হয়, সেই লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত এই প্রকল্পের রূপায়ণ ঘটাতে চান। পুজোর পর কাজ শুরু হলে আগামী বছর বর্ষার আগে তা শেষ করা সম্ভব হবে। ফলে ভাঙন কবলিত এলাকার বহু মানুষ আগামী বর্ষার আগে নিস্তার পাবেন বলে আশাবাদী নবান্নের কর্তারা।