নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার তাঁতশিল্পীদের হাল ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেন স্কুল পড়ুয়াদের পোষাকও এবার থেকে আর কেনা হবে না। বরঞ্চ তা রাজ্যের তাঁত শিল্পীদের বরাত দিয়ে বুনিয়ে নেওয়া হবে। সেই মতো এবার রাজ্যের ১ কোটি স্কুল পড়ুয়াকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্কুলের ইউনিফর্ম দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। রাজ্য সরকারের অধীনস্থ বা পোষিত স্কুলগুলিতে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রথম শ্রেনী থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ুয়াদের নাম নথিভুক্তক্রণের প্রক্রিয়া। আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে ১ কোটি পড়ুয়ার হাতে দুটি করে ইউনিফর্ম তুলে দেওয়া হবে। অর্থাৎ মোট ২ কোটি স্কুল ইউনিফর্ম আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে পড়ুয়াদের হাতে তুলে দিতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন মা-মাটি-মানুষের সরকার। হবে। আপাতত, গ্রামীণ এলাকা ও শহরতলির বেশ কিছু স্কুলে কতজন পড়ুয়ার কী মাপের পোশাক লাগবে, সেই তথ্য তৈরি করা হচ্ছে।
প্রতি বছরই সরকারি ও সরকার অনুমোদিত স্কুলের প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে স্কুলের পোশাক দেয় রাজ্য সরকার। যেহেতু কোভিডকালে প্রায় দুই বছর রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ ছিল এবং এখন তা অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে, তাই আগামী দিনে প্রাক-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেনীর পর্যন্ত পড়ুয়াদের স্কুলও যে খুলে দেওয়া হবে বৃহস্পতিবারই তার ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই অবস্থায় স্কুলের পড়ুয়াদের হাতে ইউনিফর্ম দ্রুত তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু ২ কোটি ইউনিফর্ম এপ্রিল মাসের মধ্যে ১ কোটি পড়ুয়ার হাতে তুলে দেওয়া যে মুখের কথা নয় সেটা সরকারি আধিকারিকেরা বেশ ভালই জানেন। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্য যাতে ছোঁয়া যায় তার জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পাশাপাশি এমএসএমই ক্লাস্টারকেও পোশাক সেলাইয়ের কাজে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমে অবশ্য ঠিক হয়েছিল শুধু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরাই পোশাক সেলাইয়ের কাজ করবেন। এই কাজের জন্য চিহ্নিত করা হয় ৬০ হাজার ৩০৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকেও। কিন্তু এত কম সময়ে কীভাবে এক সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে রোষাক দেওয়া সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় শেষে পাশাপাশি এমএসএমই ক্লাস্টারের সদস্যদেরও এই কাজে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে নবান্নের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পোশাক রাজ্য সরকার তৈরি করায় জেলায় জেলায় বেড়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। এখন এমএসএমই ক্লাস্টার এই প্রকল্পে যুক্ত হলে রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা পোশাক ক্ষেত্রের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ইউনিটগুলি আরও বেশি করে সচল হবে। প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতে যে সব স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে, তাদেরই সেই এলাকার স্কুলের ইউনিফর্ম সেলাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ভাবে প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে জুড়ে দেওয়া হবে তাদের এলাকার স্কুলের সঙ্গে। যার জেরে পড়ুয়াদের পোষাকের মাপ নেওয়া থেকে শুরু করে পোশাক পৌঁছে দেওয়ার কাজও দ্রুত সেরে ফেলা যাবে। ফলে পোশাক যোগান দেওয়ার চিন্তা থেকেও অনেকটাই মুক্ত থাকা যাবে।’