নিজস্ব প্রতিনিধি: ময়নাগুড়ির দোমহনি স্টেশনের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর রেলের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। দুর্ঘটনার পিছনে কারণ জানতে এবং কারও গাফিলতি আছে কিনা জানতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চলছে। দুর্ঘটনার পরই কয়েকঘণ্টার মধ্যে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব নিজেই ছুটে এসেছিলেন ঘটনাস্থলে। রেলমন্ত্রী নিজে এমটেক ইঞ্জিনিয়ার, তাই ঘটনাস্থল এবং দুর্ঘটনাগ্রস্থ ইঞ্জিনটি দেখেই বুঝেছিলেন দুর্ঘটনার কারণ।
প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন ইঞ্জিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ভেঙেই এই বিপত্তি। এরপর রেলকর্তাদের কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন পরিস্থিতি পর্যালোচনার। সেই নির্দেশ পেয়েই বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান বিজয় কুমার ত্রিপাঠী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী স্বয়ং। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন রেলের প্রতিটি জোনের গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে বেশ কয়েকটি জরুরি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মূলত দুর্ঘটনা এড়াতে সুরক্ষার বিষয়েই জোর দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল দ্রুতই দেশের সমস্ত যাত্রীবাহী ট্রেনের কামরা এলএইচবি প্রযুক্তির কামরায় পরিবর্তিত করা হবে। অর্থাৎ, পুরোনো লড়ঝড়ে আইসিএফ কোচ বদলে নতুন অত্যাধুনিক এলএইচবি কোচ দেওয়া হবে। এই আইসিএফ কোচের সুরক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্নচিহ্ন ছিল। তাই রেল মন্ত্রক ২০১৮ সালের পর থেকে আইসিএফ কোচ তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। এখন রেলের যাবতীয় কোচ ফ্যাক্টারিতে এলএইচবি কোচ তৈরি হয়। সূত্রের খবর, সেই সমস্ত কারখানায় আরও বেশি অত্যাধুনিক কামরা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠকে।
পাশাপাশি যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ট্রেনের ইঞ্জিন নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেমন, এবার থেকে প্রতিটি যাত্রার আগে ইঞ্জিনের সঠিক পরীক্ষা হবে। পাশাপাশি কোনও স্টেশনে ট্রেন বেশিক্ষণ দাঁড়ালে আবার পরীক্ষা করা হবে সেই ইঞ্জিন। ফলে যাত্রাকালে কোনও ইঞ্জিনে ত্রুটি ধরা পড়লে দ্রুতই সেটি সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া, যারা রেললাইন পরীক্ষা করেন তাঁদের অবস্থান জিপিএস-এর সাহায্যে ট্র্যাকিং করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর জেরে কেউ কাজে ফাঁকি দিতে পারবেন না।