নিজস্ব প্রতিনিধি: হুগলি(Hooghly) জেলার সদর শহর চুঁচুড়া(Chinsurah)। ২০১১ সালের পরিবর্তনের আগেই এই শহরের পুরবোর্ড চলে এসেছে তৃণমূলের(TMC) দখলে। উন্নয়নও হয়েছে। কিন্তু পুরবাসীর অভিযোগ, এই উন্নয়নের ছবি যত না ধরে পড়ে তার থেকে বেশি চোখে ধরা পড়ে পুরবোর্ডের গোষ্ঠীকোন্দল অচলাবস্থা। কয়েক মাস আগেই এই পুরসভায় নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। আবারও ক্ষমতায় ফিরেছে সেই তৃণমূলই। কিন্তু পুরবোর্ডের গোষ্ঠীকোন্দল ও অচলাবস্থার ছবিটা বদলায়নি। কার্যত এখন সেখানে রীতিমত জোট বাঁধছেন কাউন্সিলররা পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার জন্য। ইতিমধ্যেই তাঁরা পুরপ্রধানের ডাকা বৈঠকে যাওয়া বা অংশ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। আর এই প্রেক্ষাপটেই এবার রবিবার সকালে চুঁচুড়া শহর ছেয়ে গেল পোস্টারে পোস্টারে। আর তাতেই তীব্র অস্বস্তি ছড়ালো জোড়াফুল শিবিরে।
রবিবার সকাল থেকেই চুঁচুড়া শহরজুড়ে দেখা যাচ্ছে পোস্টার(Postar)। কে বা কারা শনিবার রাতে ওই পোস্টার লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছে। পোস্টার পড়েছে শহরের ঘড়ির মোড়, পিপুলপতির মোড়, কারবালা মোড়, হুগলি মোড়, হুগলি ঘাট স্টেশন, হুগলি স্টেশন, চুঁচুড়া স্টেশন, ইমামবাড়া হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায়। পোস্টারে লেখা, ‘চুঁচুড়াতে উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা সরানো হচ্ছে। এই ঘটনার তদন্ত চাই।’ শহরের তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি বিজেপি(BJP) থেকে এইসব পোস্টার লাগানো হয়েছে। যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এই অভিযোগ তো অস্বীকার করেইছে, উল্টে তাঁরা এই ঘটনার দায় চাপিয়েছে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলের ওপরে। শহরের আমজনতার রায়ও তাই। উল্লেখ্য, শনিবার চুঁচুড়া পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান অমিত রায়ের(Amit Roy) বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে বোর্ড মিটিং বয়কট করেন প্রায় ২০ জন তৃণমূল কাউন্সিলার। ফলে হাতেগোনা কয়েকজন পুর-প্রতিনিধিকে নিয়েই বৈঠক হয়। ৩০টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট চুঁচুড়া শহরের ২৯টি ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বিরোধী হিসাবে পুরসভায় রয়েছেন ১জন মাত্র সিপিআই(এম) কাউন্সিলর।
কিন্তু ঘটনা হচ্ছে এবছর পুরনির্বাচনের পরে তৃণমূলের তরফে দলীয় নেতৃত্ব চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান পদে অমিত রায়কে বসায়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি দলের অধিকাংশ কাউন্সিলর। তাঁরাই এখন ক্রমশ জোট বাঁধছেন অমিত রায়ের বিরুদ্ধে দ্রুত অনাস্থা আনার জন্য। রাজ্যের পঞ্চায়েত আইন অনুসারে নির্বাচনের পরে প্রথমবার বোর্ড গঠনের পরে প্রথম ৩ বছরে কিবা পঞ্চায়েত প্রধান, কিবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কিবা জেলা পরিষদের সভাধিপতি কারোর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যায় না। কিন্তু পুরসভার ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনও নিয়ম নেই। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পুজোর আগেই চুঁচুড়া পুরবোর্ডে পুরপ্রধানকে অপসারণ করতে চাইছেন বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা। এদিন যে পোস্টারকাণ্ডে শহর সরগরম হয়েছে সেটাও এই বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের কাজ বলেই অনেকে মনে করছেন। ঘটনার জেরে অমিত রায় জানিয়েছেন, প্রাক্তন পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় চেয়ারম্যান হতে চাইছেন। তাই তিনি আমার বিরুদ্ধে এইসব অন্যায় অভিযোগ আনছেন। পুরবোর্ডে অচলাবস্থা তৈরি করছেন।