নিজস্ব প্রতিনিধি: অতিবৃষ্টির(Heavy Rain) জেরে কিছুদিন আগে রাজ্যের আটটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি(Flood Situation) তৈরি হয়েছিল। বহু এলাকায় ঘরবাড়ি ও চাষের জমি জলে ডুবে যায়। এবার রাজ্যের কৃষি দফতরের(West Bengal State Agriculture Department) তরফে জানানো হয়েছে, এই বন্যায় রাজ্যে মোট ১১০৯ কোটি টাকার কৃষিপণ্যের(Agriculture Products) ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার হেক্টর কৃষিজমি প্লাবিত হওয়ায় এই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৬ লক্ষ কৃষক(Farmers) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষির ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত যে রিপোর্ট রাজ্যের কৃষি দফতরে এসেছে, তার ভিত্তিতে এই তথ্য উঠে এসেছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমন ধানের। ৯১ হাজার হেক্টর ধানজমি প্লাবিত হয়েছে। কলাই চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৩ হাজার হেক্টরে। ৬ হাজার হেক্টর বাদাম চাষের ও প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষের ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষি দফতর জানিয়েছে।
রাজ্যের কৃষি দফতরের আধিকারিকদের দাবি, ১১০৯ কোটি টাকার কৃষিপণ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে। অতিবৃষ্টিতে প্লাবিত জমির পরিমাণ ছিল প্রায় দেড় লক্ষ হেক্টর। পরবর্তীকালে দেখা যায়, কৃষিপণ্যের ক্ষতি হয়েছে এমন জমির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। এখন এই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে ইতিমধ্যে তৎপর হয়েছে রাজ্যের কৃষি দফতর। জানা গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বিনা পয়সায় বীজ দেওয়া হবে ফের চাষ করার জন্য। এর জন্য আপাতত ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কৃষি দফতরের তরফে, সরষে, মুসুর ডাল, খেসারি ডাল ও ভুট্টার বীজ দেওয়া হবে। জল নামার পর যাতে দ্রুত চাষ শুরু করা যায়, তার জন্য এই ব্যবস্থা করতে চাইছে দফতর।
এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির বেশিরভাগ অংশেই ধান চাষ হয়েছিল। খরিফ মরশুমে ধান চাষিরা রাজ্য সরকারের শস্য বিমার আওতায় থাকেন। এর জন্য চাষিদের অবশ্য কোনও খরচ হয় না। বিমার প্রিমিয়ামের পুরোটাই রাজ্য সরকার দেয়। ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করে বিমা সংস্থা যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণের টাকা চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেয়, তার জন্য সক্রিয় হয়েছে কৃষি দফতর। আরও জানা গিয়েছে, কৃষির ক্ষতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে বিশেষ ক্ষতিপূরণ দাবি করা হবে। তবে রাজ্যে গত কয়েকটি বন্যার সময় দেখা গিয়েছে, এ ব্যাপারে বিশেষ সাড়া পাওয়া যায়নি কেন্দ্রের। তাই দাবি জানানো হলেও ক্ষতিপূরণ কতটা পাওয়া যাবে বা আদৌ কিছু মিলবে কি না, সেই ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দিহান দফতরের কর্তারা।