নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: কথায় আছে, লেখা পড়ার কোনো বয়স নেই, চেষ্টা করলে একদিন না একদিন সফল হবেনই। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে বহু ভিডিও ভাইরাল হয়। কিছু কিছু ভিডিও প্রমাণ করে যে, সোশ্যাল মিডিয়া খারাপ। আবার কিছু কিছু ভিডিও একেবারে মানবিকতা বা অন্য কোনও শিক্ষার পাঠ পড়িয়ে দিয়ে যায়। সম্প্রতি ভিডিও নয়, ঢাকা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত দারুণ একটি তথ্য সামনে এলো। কিছুদিন আগেই একটি ভাইরাল ভিডিওতে উঠে এসেছিল যে, একজন কন্যা তাঁর মাকে নতুন করে কলেজে ভর্তি করিয়ে মায়ের স্বপ্নপূরণ করলেন।
এমনকী সন্তানরা বড় হয়ে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করছে, এরকম বহু ঘটনাই আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারা প্রকাশ্যে আসে। আসলে ছোটবেলায় হয়তো পরিবারের চাপে বা আর্থিক অভাবে অনেকেই লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেন না, একপ্রকার বাধ্য হয়েই কাজে নামতে হয়। আর পড়াশোনা সেখানেই শেষ হয়ে যায়। যখন সন্তানের উদ্যোগে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করলেন। আসলে লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই। সত্যিই এমনটাই আরও একবার প্রমাণ করলেন মোহাম্মদ এখলাস উদ্দিন নয়ন নামে এক ব্যক্তি। যাঁর বয়স বর্তমানে ৪৫। চলতি বছর ছেলের সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বসেছিলেন এই ব্যক্তি।
তাও আবার ছেলের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। এই বয়সেও যে ইচ্ছে এবং মনের জোর থাকলে সবকিছু করা সম্ভব সেটাই প্রমাণ করলেন জনৈক ব্যক্তি। মাধ্যমিক পরীক্ষায় বাপ-ছেলে দুজনেই সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়ে একেবারে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। নয়ন পাশের তাঁর বাড়ি ঢাকা ময়মনসিংহর একটি ইনস্টিটিউট থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। আর পিতা ও পুত্র দুজনেই সমান গ্রেড পেয়ে পাস করলেন। তাঁর ছেলে মোহাম্মদ রায়হানের বয়স ১৭। সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তাঁদের পরীক্ষার ফলাফল বেরিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে এখলাস উদ্দিন নয়ন বলেছেন, “বয়স হয়ে যাওয়ায় আমার লেখাপড়া করার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু স্ত্রী সামলা বেগমের কারণেই ছেলের সঙ্গে আমাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। লেখাপড়ায় আমার চেয়ে তার আগ্রহ বেশি।পরীক্ষা দেওয়ার সময় কিছুটা লজ্জা লাগলেও ফলাফল পেয়ে খুব ভালো লাগছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ছেলের সঙ্গে আমিও কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাব।” নয়নের মেয়ে সম্প্রতি গ্রাজুয়েশন পাস করেছেন। আপাতত বাবা-ছেলের পাসের খবরে উচ্ছ্বসিত গোটা ময়মনসিংহ।