নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: করোনার কালবেলায় অনেকে পথে বসেছেন। কেউ কাজ হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন, কারও ব্যবসা লাটে উঠে গিয়েছে। কিন্তু মারণ ভাইরাসের বেনজির তাণ্ডবের মধ্যেও অনেকে ফুলেফেঁপে উঠেছেন। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তথ্যই বলছে, এক বছরে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৮ হাজার ৮৬ জন। ব্যাঙ্কে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন গ্রাহকের সংখ্যা এক লাখ এক হাজার ৯৭৬ জন।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশে করোনা মহামারী শুরু হওয়ার সময়ে অর্থাৎ মার্চ মাসে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিতে এক কোটি টাকার বেশি আমানত থাকা অ্যাঙ্কাউন্টের সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫টি। দেশে লাগাতার লকডাউন যেমন লক্ষ লক্ষ মানুষকে পথে বসিয়ে দিয়েছে, তখনই দেখা যায়, ধনীদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ছয় মাস বাদে সেপ্টেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেই সংখ্যা দাঁড়ায় এক লাখ এক হাজার ৯৭৬টিতে। শুধু মহামারীর ২১ মাসে কোটিপতি হিসাবধারী অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ১৯ হাজার ৩৫১টি।
বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিতে ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৪টি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। জমা পড়া অর্থের পরিমাণ ১৫ লাখ ১২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ হাজার ৮৮৩ টি। ১৭ হাজার ৯টি অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে এক লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। ৫ হাজার ৮৪টি অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ২০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকার উপরে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল পাঁচজন। ১৯৭৫ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ জনে। ১৯৮০ সাল শেষে কোটিপতি ছিলেন ৯৮ জন। ১৯৯০ সালে ৯৪৩ জন, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২ জন।