নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ: দাম্পত্য কলহের কারণে স্ত্রী আগেই ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সম্পর্ক চিরতরে ঘুচিয়ে দিতে বিবাহ-বিচ্ছেদের পথেও হেঁটেছেন। আর তাতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্বামী। ফেসবুক লাইভে এসে সে কথা ঘোষণাও করেছিলেন। কিন্তু তখনই পরিত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন ফতুল্লা থানার সাব ইন্সপেক্টর সুকান্ত দত্ত। আত্মহননে উদ্যত যুবককে ফোনে দীর্ঘক্ষণ ধরে বুঝিয়ে নিরস্ত করলেন। রক্ষা পেল তিন জীবন। শুধু তাই নয়, ওই যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিও মিটিয়ে দিয়েছে পুলিশ। আর পুলিশের এমন মানবিক মুখকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন নেটা নাগরিককরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ বছর আগে ওই যুবকের বিয়ে হয়। তাদের ৯ বছর বয়সী এক মেয়ে ও ৪ বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে কিছুদিন আগে স্বামীকে ছেড়ে চলে যান স্ত্রী। সন্তানদের কথা মাথায় রেখে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন ওই যুবক। কিন্তু সেখানে লাঞ্ছিত হতে হয় তাঁকে। তার পরেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ফেসবুকে লাইভে এসে দুই সন্তানসহ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার কথা জানান তিনি। এক বন্ধু সে কথা জানতে পারার সঙ্গে জাতীয় সেবা নম্বর ‘৯৯৯’-এ ফোন করেন।
সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশের পক্ষ থেকে ওই যুবকের ফেসবুক লিঙ্ক থেকে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। ফতুল্লা থানার সাব ইন্সপেক্টর সুকান্ত দত্ত লাইভে থাকা যুবকের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। আত্মহননে উদ্যত যুবক জানান, স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার কোনও পথ খোলা না থাকায় ছেলেমেয়েসহ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দীর্ঘ ৪৫ মিনিট ধরে ওই যুবককে বোঝান সুকান্তবাবু। সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য রাজি হয় ওই যুবক।
এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রচণ্ড হতাশা থেকে দুই সন্তান নিয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওই যুবক। চরম সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে নিরস্ত করে তিনটি প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে, এটাই বড় পাওয়া। ওই যুবককে শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে তুলে দিয়ে মানবিক কারণে তাঁকে আর একবার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।’