নিজস্ব প্রতিনিধি, যশোর: নিজের সন্তানের আবদার মেটাতে গিয়ে সর্বসান্ত হয়েছিলেন। জমিজমা বেচে দিয়ে কার্যত নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। তবুও ছেলের মানসিক অত্যাচার বন্ধ হয়নি। সহ্যের সীমা পার হয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত চরম পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিলেন জন্মদাতা। প্রথমে ঘুমন্ত অবস্থায় ছেলের পায়ে বৈদ্যুতিক শক দিলেন। তার পরেও মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করলেন আত্মজকে। রবিবার রাতে অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে যশোর সদরের ফতেপুর ইউনিয়নের পূর্ব চাঁদপাড়া গ্রামে। ইতিমধ্যেই ঘাতক বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। যন্ত্রণার জীবন থেকে বাঁচতে ফাঁসিতে ঝোলানোর জন্য দাবি জানিয়েছেন ধৃত নুরুল ইসলাম।
আজ সোমবার যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরেই চাঁদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও ছেলে রুহুল আমিনের ঝামেলা চলছিল। স্ত্রী ও ছেলের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে রবিবার রাতে চরম সিদ্ধান্ত নেন। রবিবার রাতে যখন নিজের ঘরে ঘুমিয়েছিল রুহুল তখনই ছেলের বাঁ পায়ে বৈদ্যুতিক তার পেঁচিয়ে প্রথমে শক দেন। তার পরে ছেলের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সোমবার সকালে ঘরের ভিতর থেকে রুহুলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধৃতের শ্বশুরবাড়ির অভিযোগ, ছেলে এবং স্ত্রীর অত্যাচারের ভুয়ো গল্প ফেঁদেন নুরুল ইসলাম। আসলে তিনি মাদকাসক্ত।
ছেলেকে নৃশংসভাবে খুনের পরেও অনুশোচনা নেই ঘাতক নুরুল ইসলামের। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে পরিশ্রম করতে পারি না বলে দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অত্যাচার চালাচ্ছিল ছেলে ও স্ত্রী। জমি বিক্রি করে ৪১ লাখ টাকা সংসারের পিছনে খরচ করেছি। সর্বসান্ত হয়েছি। ছেলেকে হত্যা না করে কোনও উপায় ছিল না। নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চাই। আমাকে ফাঁসি দেওয়া হোক।’