নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: এবার প্রথম বাংলাদেশের মহিলা হিসেবে সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। এবার পদ্মপারে মা হিসেবে রীতিমতো রেকর্ড গড়লেন আজমেরী হক বাঁধন। গত ২২ এপ্রিল এই মামলার রায় বেরিয়েছে। গোটা ঘটনাটিই একেবারে সিনেমার মতো। যদিও বাঁধনের সাড়া জাগানো ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমাটি যারা দেখেছেন তাঁরা হয়তো পর্দার সঙ্গে বাস্তবের বাঁধনের লড়াইটা খানিকটা মেলাতে পারবেন। যে ছবিতে তাঁকে একটি সন্তানের জন্যে লড়াই করতে দেখা গিয়েছিল। পর্দায় তাঁর অভিনয় এবার বাস্তবে প্রতিফলিত হল। বিচ্ছেদের পর নিজের মেয়ের পূর্ণ অভিভাবকত্বের জন্যে দীর্ঘদিন লড়াই চালিয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন।
সেই লড়াইয়ের পথে আরও এক ধাপ এগোলেন তিনি। এর আগে বাংলাদেশের কোনও মহিলা সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পাননি। বাঁধন প্রথম সন্তানের মা হিসেবে পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেতে চলেছেন। বাঁধনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নের জন্যে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটিও গঠন করার নির্দেশ দিল আদালত। এক্ষেত্রে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে নীতিমালা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ। আসলে বাংলাদেশের অভিভাবক এবং প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর ১৯(খ) ধারা অনুসারে, কোনও নাবালক সন্তানের বাবা জীবিত থাকলে সেই নাবালক সন্তানের দায়িত্ব অন্য কারুর নেওয়ার অধিকার নেই।
সেক্ষেত্রে বাঁধন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা যিনি সন্তানের পূর্ণ অভিভাবছলেছহেনপেতে চলেছেন। এ নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত বাঁধন। এ বিষয়ে একটি সংবাদমাধ্যমকে বাঁধন জানান, এই আইনটা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হল, এটা সবচেয়ে আনন্দের। যাঁরা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন, তাঁদের সাধুবাদ। তবে তাঁর অর্জনটা শুধু তাঁরই থাকুক, সেটা তিনি চান না। বাংলাদেশের সব মায়ের অধিকার থাকুক তাঁদের সন্তানের ওপর। যদিও ছয় বছর আগে তিনি কন্যার অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন। কিন্তু এই রায়ের মাহাত্ম্য তখন বুঝতে পারেননি অভিনেত্রী। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গুরুত্বটা বুঝেছেন, সন্তানকে কাছে রেখেছেন, ভরণপোষণ করেছেন। তাহলে অভিভাবক হওয়ার সমস্ত অধিকা আছে তাঁর। বাচ্চার বাবা কোনও দায়িত্ব পালন করেননি।
আদালতে সেটি প্রমাণিত হয়েছে। আইন সম্পর্কে বাঁধন বলেন, আইনজীবী সারা হোসেন কিন্তু উল্লেখ করেছিলেন যে, সাধারণত মাকে বাচ্চার সমস্ত কাস্টডি দেওয়া হয়। কিন্তু বাবা বেঁচে থাকতে মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয় না। বাবা না পেলে, সেক্ষেত্রে কাকা-মামারা অভিভাবকত্ব পান। এরপরে আসে মায়ের নাম। তাই যখন বাঁধন প্রথমেই পেয়ে গেলেন বাচ্চার পূর্ণ অধিকার, তখন নিঃসন্দেহে বাঁধনের এটা বড় জয়।