এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

মহাকালের জন্মদাত্রী কালী! তাঁর দূত দেবাদিদেব…

নিসর্গ নির্যাস মাহাতো: মহাকালিকা (KALI)। যিনি সৃষ্টির আদি, সমস্ত সৃষ্টের জননী। জানেন তিনি কে? কেন শিবের জন্মদাত্রী? কী করেই বা স্ত্রী হলেন? বিশ্ব ব্রম্ভাণ্ডের সূচনালগ্নে অন্ধকারময় জগৎ সংসার থেকে বেরিয়ে এল উজ্জ্বল আলোক শিখা। আত্মপ্রকাশ করলেন আদ্যা শক্তি পুরাতনী। সৃষ্টি করলেন মহাকাল!

তারপর, মহাকাল শক্তিকে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর তিন রূপ দিলেন তিনি। সৃষ্টি করলেন কারণ সাগর। ত্রিদেবকে সাধনায় বসার বিধান দিলেন আদ্যা শক্তি। দেবগণ যখন কারণ সাগরে সাধনায় মগ্ন, তখন তাঁদের সামনে ভেসে আসে শব দেহ। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ঘৃণায় সরিয়ে নিলেন মুখ। যোগী দেবাদিদেব জ্ঞানচক্ষুতে দেখতে পেলেন, এই শব দেহ আসলে মহাশক্তি কালিকা। ধারণ করলেন বক্ষে। তারপর মহাকালী যোগী শ্রেষ্ঠকে বলেন, তিনিই মহাকালীর পূর্ণ শক্তি ধারণে সক্ষম। প্রস্তাব দিলেন, সহধর্মিনী রূপে বরণের। দেবাদিদেব বলেন, তিনি ধন্য কিন্তু এই আদ্যা শক্তি থেকেই তাঁর জন্ম। জননীকে কীভাবে স্ত্রী হিসেবে বরণ করবেন?! মহামায়ার প্রত্যুত্তর, ব্রহ্মার মানস পুত্র দক্ষের কন্যা সতী রূপে জন্ম গ্রহণ করবেন তিনি। 

অসুরকূল স্বর্গ দখল করেছে। দেবকূল হিমালয়ে আদ্যা শক্তির স্তব করছেন। পার্বতী তখন গঙ্গাস্নানে। দূর থেকে দেবীকে দেখতে পেলেন চণ্ড ও মুণ্ড। অসুর রাজা শুম্ভ ও নিশুম্ভের দুই সহচর। অপরূপা দেবীর খবর পৌঁছাল শুম্ভ, নিশুম্ভের কাছে। তাঁরা মহাসুর সুগ্রীবকে দূত নির্বাচন করে শুম্ভ-প্রণয়ের বার্তা দিয়ে পাঠালেন দেবীর কাছে। দেবী প্রত্যাখ্যান করলেন সেই বার্তা। প্রস্তাব দিলেন যুদ্ধের। বেজে উঠল রণ দুন্দুভি। দেবী তাঁর দুই ভ্রূর মধ্যিখান থেকে সৃষ্টি করলেন উগ্ররূপী কালী। ক্রোধে হুংকার করতে থাকলেন। দেবী মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসতে থাকল অগ্নি শিখা। অগ্নিশিখায় ভষ্মিভূত হলেন অসুর সেনাপতি ধূম্রলোচন।

ধূম্রলোচনের মৃত্যুর পর শুম্ভ সেনাপতি নিযুক্ত করলেন চণ্ড ও মুণ্ডকে। দেবী কালী থেকে হয়ে উঠলেন আরও ভয়াবহ। দেবী চণ্ডিকা। খড়গ হাতে বধ করলেন অসুর সেনাপতিদ্বয়কে। ভয়াল, কৃষ্ণবর্ণ, বর্ষার মেঘের মত খোলা কেশ, হাড় হিম করা হাসি, রক্তবর্ণ চক্ষু, খড়গ ধারিনী। অসুর মস্তক তাঁর মাল্য, কোমর বন্ধনী হয়ে উঠেছে অসুরগণের হস্ত।

দেবী চণ্ডিকা অসুর রাজ শুম্ভ, নিশুম্ভের কাছে দেবাদিদেব শিবকে দূত হিসেবে প্রেরণ করলেন। শিব সতর্ক বাণী দিলেন অসুর ভ্রাতাগণকে। দেবীর উগ্র রূপ ও শক্তি সম্পর্কে সাবধান করে নির্দেশ দিয়েছিলেন, রক্ত নিয়ে খেলা বন্ধ করার।

দেবাদিদেবের কথায় অসম্মত হন অসুর রাজ ও তাঁর ভ্রাতা। তাঁরা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রেরণ করলেন মহা পরাক্রমশালী রক্তবীজকে। দেবী চণ্ডিকা শিরচ্ছেদ করলেন  রক্তবীজের। অসুরের রক্তবিন্দু যেখানেই পড়ে সেখান থেকেই জন্ম নেয় হাজার হাজার রক্তবীজ অসুরের। যুদ্ধক্ষেত্রে দেবী হয়ে ওঠেন ভয়াবহ চামুণ্ডা। খড়গ হাতে শিরশ্ছেদ করতে থাকেন অসুরদের। তাঁর অপর হাতে মাটির সরা। এক ফোঁটা রক্তও মাটিতে পড়তে না দিয়ে পান করতে থাকেন অসুরদের রক্ত। অসুরের শেষ দেহ থেকে রক্ত পান করে রক্তহীন দেহ ছুঁড়ে ফেলেছিলেন  যুদ্ধক্ষেত্রে।

অহংকারী অসুর রাজ শুম্ভ ও নিশুম্ভ অনবরত বাণ নিক্ষেপ করতে করতে ভয়াল দেবীর সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। দেবী ত্রিশূল দিয়ে সমস্ত বান দ্বিখণ্ডিত করতে থাকেন। দেবীকে প্রতিহত করতে অসুর রাজ শুম্ভ শূল নিক্ষেপ করলে দেবী মুষ্টি দ্বারা তা দ্বিখণ্ডিত করে বান নিক্ষেপ করেন নিশুম্ভের প্রতি। সংজ্ঞা হারান অসুর রাজ ভ্রাতা। অসুর রাজ ক্রোধান্বিত হয়ে দেবীকে হস্ত দ্বারা বন্দি করতে উদ্যত হন। নিশুম্ভ সংজ্ঞা প্রাপ্ত হয়ে দেবীকে গদা দিয়ে আক্রমণ করলে দেবী বান নিক্ষেপ করে নিশুম্ভের বক্ষ বিদীর্ণ করেন। বিদীর্ণ বক্ষ থেকে আত্মপ্রকাশ করে এক ভয়াবহ অসুর। দেবী চামুণ্ডা খড়গ হাতে তাঁর শিরশ্ছেদ করে বিনাশ করেন নিশুম্ভকে।

অবশেষে যুদ্ধক্ষেত্রে মুখোমুখি দেবী ও অসুর রাজ শুম্ভ। বাণ, গদা, বজ্র নিয়ে মহাযুদ্ধের পর দেবী চণ্ডী শূল দ্বারা বিদ্ধ করেছিলেন মহাসুর শুম্ভের বক্ষ।

তিনিই উগ্র কালী যাঁকে শান্ত করতে স্বয়ং দেবাদিদেব বিরাজ করেছেন পদতলে। লজ্জিত দেবী তখন দক্ষিণা কালী। সৃষ্টির আদিই আদ্যা শক্তি মহামায়া, আদ্যা আলো যাঁর দূত স্বয়ং মহাকাল। যাঁর মধ্যে বিরাজ করছেন মহাকালের তিন শক্তি সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা, স্থিতি দেব বিষ্ণু ও বিনাশকারী শিব। তিনি কখনও উগ্র, কখনও শান্ত। তিনি এক, অদ্বিতীয়া। তিনি পার্বতী, গৌরী। তিনিই মহিষাসুরমর্দিনী, দুর্গা,  মহামায়া।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

গন ভাইফোঁটার পরিকল্পনা নিয়েছে বসিরহাটের ‘নবোদয় সংঘ’

বনগাঁ থানার এবারের কালীপুজোর থিম ‘ কৈলাস পর্বতে মহাদেব’

বাঁকুড়ার সাঁতরা বাড়ির “বড় বৌমা” পূজিত হলেন মা কালীর রূপে

নৈহাটির বড়মার পুজোয় ভক্তদের ভিড়

তারাপীঠে সারারাত খোলা থাকছে গর্ভ গৃহের দরজা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন উপবাস, নিজের হাতে রান্না করলেন ভোগ

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর