নিজস্ব প্রতিনিধি, মুম্বই: একেই বলে ললাট লিখন। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সুদূর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিল সাংলি জেলার মিরাজ গ্রামের বাসিন্দা ২১ বছরের যশোধরা শিন্ধে। কিন্তু পড়া অসমাপ্ত রেখে মাঝপথেই জন্মভিটেয় ফিরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়তে হয়েছিল। প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়ে শুধু জেতেইনি ২১ বছরের মরাঠী কন্যা, সেই সঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানও নির্বাচিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেওয়ার ব্রত নেওয়া যশোধরা নিজের স্বপ্নও অপূর্ণ রাখতে চায় না। তাই অনলাইনেই ডাক্তারি পড়ার বাকি কোর্স সম্পূর্ণ করে নিতে চাইছে।
চার বছর আগেই ডাক্তারি পড়তে জর্জিয়ার ভিশন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল সাংলি জেলার মিরাজ গ্রামের বাসিন্দা যশোধরা। গত চার বছর মনোযোগ দিয়েই পড়াশোনা চালিয়েছিল। কোর্স শেষ হতে আরও দেড় বছর বাকি ছিল। কিন্তু আচমকাই জর্জিয়ায় বসে পরিবারের ফোন পায় সে। গ্রামের মানুষের দাবি রাখতে যশোধরাকে দেশে ফিরে এসে ভোটে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয় পরিবার। সেই নির্দেশ আর অমান্য করেনি চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখা একুশ বর্ষীয় তরুণী। তড়িঘড়ি দেশে ফিরে এসে গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটে লড়েছিল যশোধরা। জিতে সোজা পঞ্চায়েত প্রধান।
গ্রামের প্রধান হিসেবে মহিলাদের আত্মনির্ভর বানানোই যে তাঁর প্রথম কাজ হবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে যশোধরা। তাঁর কথায়, ‘মেয়েদেরও পুরুষদের মতো সমান সুযোগ মেলা উচিত। যাতে তাঁরা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে। তাই মেয়েদের শিক্ষার বিষয়টি নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আটপৌরে গ্রাম্যবধূদের ই-লার্নিংয়ের সঙ্গে পরিচিত করতে চাই। গ্রামের বাচ্চারাও যাতে শহরের পড়ুয়াদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে তার জন্য একাধিক কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ মানুষের উন্নতির জন্য ঝাঁপালেও নিজের অসমাপ্ত ডাক্তারি পড়ার কোর্স অনলাইনেই শেষ করতে চাইছে মিরাজের নয়া গ্রাম প্রধান।’