নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিশ্বের দূষিত বায়ুর স্থানগুলির ফের তালিকায় দিল্লির নাম। বায়ুদূষণের কারণে দিল্লিতে বাসিন্দাদের গড় আয়ু কমছে প্রায় ১২ বছর। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স রিপোর্ট অনুযায়ী এই তথ্য জানা গিয়েছে।
এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স আয়ুষ্কালের উপর কণা দূষণের প্রভাব পরিমাপ করে। ২০২১ সালের তথ্যের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট দেওয়া হয়। দেখা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানের থেকে প্রতি ঘনমিটারে অধিক পরিমাণ অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা পাওয়া গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মান অনুযায়ী প্রতি ঘনমিটারে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা ৫ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ একজন মানুষকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে কম অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা পিএম-২.৫ থাকতে হয়।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালে দিল্লির বার্ষিক গড় পি.এম ২.৫ মাত্রা ১২৬.৫ µg/m3। যা নির্ধারিত মানের চেয়ে ২৫ গুণ বেশি। ২০২০ সালে সালে, পি.এম ২.৫ মাত্রা ছিল ১০৭ µg/m3। এই মাত্রা স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। ভারতে এই মাত্রা ২০২০ সালে ৫৬.২ µg/m3 এবং ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮.৭ µg/m3 । যা ডব্লিউএইচও-এর নির্ধারিত মানের থেকে ১০ গুণ বেশি।
এই কণা দূষণ ভারতের মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। আয়ুকাল হ্রাস, কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং শিশু ও মাতৃ অপুষ্টির জন্য দায়ী। এই কণা দূষণ ভারতীয়দের আয়ু গড় ৫.৩ বছর কমিয়ে দেয়। কার্ডিওভাসকুলার রোগগুলি প্রায় ৪.৫ বছর আয়ু কমিয়ে দেয়। শিশু এবং মাতৃ অপুষ্টির কারণে আয়ু ১.৮ বছর কমে যায়। ডব্লিউএইচও নির্দেশিকা না মানলে ভারতীয় বাসিন্দাদের আয়ু গড়ে ৫.৩ বছর কমে যায়। এমনকি ভারতের বিহার, চণ্ডীগড়, দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গকে দেশের সবচেয়ে দূষিত অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে রিপোর্টটিতে। এই দূষণের মাত্রা থাকলে গড় আয়ু ৮ বছর আয়ু কমতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
শুধু ভারত্ন নয় দক্ষিণ এশিয়ায় বহু দেশে ২০১৩ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৯.৭ শতাংশ বায়ুদূষণ বেড়েছে। ভারতে পি.এম২.৫ মাত্রা বেড়েছে ৯.৫ শতাংশ, পাকিস্তানে ৮.৮ শতাংশ, বাংলাদেশে ১২.৪ শতাংশ বেড়েছে”।
গত এক যুগে বিশ্বে চিন বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সফল তা উল্লেখ করা হয়েছে। দূষণকারী শিল্পকারখানার সংখ্যা কমিয়েছে। রাস্তায় জল দেওয়া থেকে শুরু করে একাধিক দূষণ প্রতিরোধকারী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দূষণ সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে বিশ্বের ছয়টি দেশে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, নাইজেরিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। বায়ুর মানের দিক থেকে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে ইউরোপের দেশগুলো।