নিজস্ব প্রতিনিধি: আবারও দেশের বুকে বাজিমাত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) বাংলার(Bengal)। টিকাকরণের পর মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হেতু দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি সংখ্যক শিশু মৃত্যুর ঘটেছে যোগী আদিত্যনাথের(Yogi Adityanath) রাজ্য উত্তরপ্রদেশে(Uttar Pradesh)। বলছে কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের(Union Ministry of Health) রিপোর্ট। আবার সেই রিপোর্টই বলছে টিকাকরণের পর সতর্কতার সঙ্গে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জনিত সমস্যা নথিভুক্ত করা এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলা। ২০২২ এবং ২০২৩—এই দুই বছরেই দেশের এক নম্বরে স্থান বাংলার। এই দুই বছরে উত্তরপ্রদেশে ২৫১ এবং ৬০৯টি শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে টিকাকরণের পর মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ারত জন্য। কিন্তু বাংলার বুকে এই দুই বছরে ওই একই ঘটনার জেরে মারা গিয়েছে ১৯ এবং ২১টি শিশু। কেন্দ্রের রিপোর্টে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জনিত সমস্যা নথিভুক্ত করা এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণের জন্যই বাংলায় শিশু মৃত্যুর ঘটনা তলানিতে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় টিকাকরণের পর উদ্বেগজনক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে বলা হয় Adverse Events Following Immunization বা AFI। এ ক্ষেত্রে এক বছরের নীচের বাচ্চাদের টিকাকরণের কথা বলা হচ্ছে। এক বছরের নীচের বাচ্চারা বর্তমানে ১২ ধরনের টিকা সরকারের থেকে বিনামূল্যে পায়। এক-একটি বাচ্চা সারা বছরে প্রায় ৫ থেকে ৬ বার টিকা পায়। তবে যে পরিমাণ বাচ্চারা টিকা পায়, সেই তুলনায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা নগন্য। নানা কারণে তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন, টিকা দেওয়ার পর অ্যালার্জি এবং তা থেকে Anaphylactic Shock। এমনকি টিকা দেওয়ার জায়গায় সংক্রমণ থেকে হয়ে যায় সেপসিসও। আবার ভয়-উদ্বেগ থেকে Panic Attack-ও হতে পারে। এইসব ক্ষেত্রে প্রয়োজন চটজলদি ব্যবস্থাগ্রহণ এবং মৃত্যু আটকানো। ২০২২ সালে সারা দেশে ১৮৮১টি AFI’র ঘটনা ঘটেছিল। মারা গিয়েছিল ৩৮১ জন। সেখানে ২০২৩ সালে টিকা দেওয়ার পর উদ্বেগজনক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা অনেকটা বেড়ে গিয়ে হয় ২৯৮৬টি। মারা গিয়েছিল ৫০০টি শিশু।
সেই ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, রাজ্যওয়াড়ি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারের Annual Reporting of Serious and Severe AFI থেকে জানা যাচ্ছে, ২০২২ সালে শুধুমাত্র যোগীরাজ্যেই টিকাকরণের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৭১টি শিশুর। ২০২৩ সালে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১০৫। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মৃতের সংখ্যায় যোগী রাজ্যের পরই আছে বিহার। তারপর কর্ণাটক। বিহারে ২০২২ এবং ২০২৩ সালে মারা যায় যথাক্রমে ৬৭ এবং ৭৫ জন। কর্ণাটকে ৩১ ও ৩৮। সেখানে বাংলায় সেই সংখ্যা ১৯ এবং ২১। এরাজ্যে ১ বছরের নীচের ১৫ লক্ষ শিশুকে ১২ ধরনের টিকা দেওয়া হয়। বছরে ৫ বার ধরলে ৭৫ লক্ষ বার এক্সপোজার হয়। সেদিক থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নগণ্য বললেও কম বলা যায়।