নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিরোধী শিবিরের দুরত্ব ক্রমশই বাড়ছে। দু’পক্ষের সঙ্ঘাত এতটাই তীব্র যে মঙ্গলবার লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান ও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বয়কট করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। যদিও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দলের সদর দফতরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কারণেই লালকেল্লার অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেননি খাড়গে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ওই যুক্তি মানতে রাজি নন।
লালকেল্লায় এদিন স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে দর্শকাসনের প্রথম সারির তিন নম্বর আসন বরাদ্দ ছিল জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধি দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের জন্য। কিন্তু গোটা অনুষ্ঠানে ওই চেয়ার খালিই রইল। মোদির ভাষণ ‘বয়কট’ করলেন দেশের প্রধান বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা। সূত্রের খবর, দর্শকাসনে বসে মোদির মুখে কংগ্রেসকে আক্রমণ, গান্ধি পরিবারকে নিশানা শুনতে চাননি খাড়গে। তাই সুকৌশলেই প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বয়কট করেছেন। লালকেল্লায় মোদির ভাষণ বয়কট করলেও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিজের ‘এক্স’ (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে এক ভিডিয়ো বার্তা আপলোড করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। ওই ভিডিয়ো বার্তায় পরোক্ষে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়েছেন খাড়গে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি সামলেছেন সেই জহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধি, রাজীব গান্ধি, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, পিভি নরসিমা রাও, মনমোহন সিংয়ের পাশাপাশি অটলবিহারী বাজপেয়ীর অবদানের কথা উঠে এসেছে খাড়গের বক্তৃতায়। খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘দেশের অগ্রগতিতে প্রত্যেক প্রধানমন্ত্রীরই অবদান রয়েছে। অটলবিহারী বাজপেয়ী-সহ প্রত্যেক প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য ভেবেছেন এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ করেছেন। কিন্তু দুঃখের হল, আজ দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র এবং স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলিকে ব্যাপক চাপের মুখে কাজ করতে হচ্ছে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে নয়া উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সিবিআই, ইডি বা আয়কর দফতরকে দিয়ে হানা দেওয়ানো হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকেও দুর্বল করা হচ্ছে। বিরোধী সাংসদদের কণ্ঠরোধ করতে হয় তাঁদের সাসপেন্ড করা হচ্ছে, নয় তো তাঁদের মাইক শব্দহীন করে দেওয়া হচ্ছে, বক্তৃতার অংশ ছেঁটে দেওয়া হচ্ছে।’