নিজস্ব প্রতিনিধি, লখনউ : ফের বিতর্কে যোগী-রাজ্য ! এবার বিজেপি শাসিত এই রাজ্যের শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করার অভিযোগ উঠল। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি স্কুলগুলিতে পঞ্চম শ্রেণির একটি পাঠ্যবইয়ে যে জাতীয় সঙ্গীত ছাপা হয়েছে, সেখানে ‘উৎকল বঙ্গ’ শব্দ দু’টি বাদ দেওয়া হয়েছে । এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে সমালোচনা ৷
বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা পাঠ্যবইগুলি ছাপার দায়িত্বে ছিল উত্তরপ্রদেশের ‘মৌলিক শিক্ষা বিভাগ’ ৷ পঞ্চম শ্রেণির হিন্দি বইয়ে জাতীয় সঙ্গীত ছাপা হয়েছিল ৷ তাতেই ধরা পড়ে এই মারাত্মক ত্রুটি ৷ কিন্তু, ঘটনার প্রকাশ্যে আসার পরই কার্যত দায় ঝেড়ে ফেলতে উঠে-পড়ে লাগে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ৷ মৌলিক শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ছাপার ত্রুটির কারণেই এমনটা ঘটেছে ! প্রশ্ন হল, তাই যদি হয়, তাহলেও জেলার স্কুলগুলিতে এই বই বিলি করার আগে কেন এই ত্রুটি আধিকারিকদের চোখে পড়ল না ? তাহলে কি তাঁরা বইগুলি আদৌ পরীক্ষা করে দেখেননি ? নাকি ইচ্ছাকৃতভাবেই এই ‘ত্রুটি’ রেখে দেওয়া হয়েছে ? প্রসঙ্গত, মথুরার একটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে এই বইগুলি ছাপানো হয়েছিল ৷ যে বইটিতে এই ত্রুটি ধরা পড়েছে, সেটির নাম, ‘বাটিকা’ ৷ পঞ্চম শ্রেণির জন্য নির্ধারিত এই বইয়ের একেবারে শেষ পৃষ্ঠায় জাতীয় সঙ্গীত ছাপা হয়েছে ৷ তাতে ‘পঞ্জাব-সিন্ধু-গুজরাত-মারাঠা’র পর আর ‘উৎকল বঙ্গ’ শব্দ দু’টি লেখা নেই ! বদলে শুরু হয়েছে, পঞ্চম লাইন ‘বিন্ধ্য-হিমাচল-যমুনা-গঙ্গা’ !
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্য়েই বাটিকা নামক এই বইটির আড়াই লক্ষ কপি ছাপার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ অর্থাৎ, তার সবক’টিতে এই ত্রুটি রয়েছে । এদিকে, মথুরার যে প্রিন্টিং প্রেসে এই বইগুলি ছাপা হয়েছে, সেখানকার মালিক প্রমোদ গুপ্তা দাবি করেছেন, এই ভুলের জন্য তাঁরা দায়ী নন । কারণ, তাঁদের শুধুমাত্র ওই বইয়ের দু’পাশের মলাট ছাপানোর বরাত দেওয়া হয়েছিল ৷ পুরো বই তাঁদের প্রেসে ছাপানো হয়নি । শুধু তাই নয়, প্রমোদের আরও দাবি, মৌলিক শিক্ষা বিভাগের কাজ থেকে সরাসরি এই কাজের বরাত পেলেও হাইটেক প্রিন্টার নামে অন্য একটি প্রেসের তরফ থেকে তাঁদের ছাপাখানায় প্রিন্ট করার জন্য আগে থেকে তৈরি করা প্লেট পাঠানো হয়েছিল । এরপর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে হাইটেক প্রেসের মালিক রামপ্রকাশের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর নাগাল পাওয়া যায়নি ৷ অন্যদিকে, প্রশাসনের তরফে ঠিক করা হয়েছে, যে বইগুলি ছাপা হয়ে গিয়েছে, সেগুলিকে বাতিল না করে ত্রুটির জায়গায় ‘উৎকল বঙ্গ’ লেখা স্টিকার সেঁটে বিলি করা হবে ৷