নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের মুখেই জোর ধাক্কা খেল গেরুয়া শিবির। দেশের শীর্ষ ও অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিত জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের প্রার্থীরা। সভাপতি, সহ সভাপতি, সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক পদে হেসেখেলে জিতেছেন বাম মোর্চার প্রার্থীরা। বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের ঘোষিত ‘টুকরে টুকরে গ্যাংয়ের উপরেই আস্থা রেখেছেন মেধাবী পড়ুয়ারা। সহ সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন শিলিগুড়ির অভিজিৎ ঘোষ।
২০১৯ সালে শেষ বার জেএনইউতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিল। দীর্ঘ সাড়ে চার বছর বাদে ফের গত ২২ মার্চ দেশের শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদের ভোট হয়েছিল। মূলত লড়াই ছিল বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি)মধ্যে। দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদ দখল করতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি গেরুয়া শিবির। বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও ছাত্র সংসদ বামপন্থীদের দখলমুক্ত করতে কোমর কষে ঝাঁপিয়েছিল বলে অভিযোগ। যদিও কোনও লাভ হয়নি।
রবিবার সকাল থেকে ভোট গণনা শুরু হতেই প্রথম দিকে এগিয়ে ছিল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের প্রার্থীরা। ফলে উল্লাসে মেতে উঠেছিল গেরুয়া সিবির। কিন্তু ভোট গণনা যত এগিয়েছে ততই পিছন থেকে দ্রুত উঠে এসে সঙ্ঘপন্থী প্রার্থীদের পিছনে ফেলে জয়ের দিকে এগোতে তাকেন বাম মোর্চার প্রার্থীরা। সংযুক্ত সম্পাদক পদে দীর্ঘক্ষণ দুই শিবিরের প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলেছিল। কিন্তু শেষ মুহুর্তে বাজিমাত করেছেন বাম শিবিরের প্রার্থী। সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন বাম ছাত্র শিবিরের ধনঞ্জয়। তিনি পেয়েছেন ৩,১০০টি ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী এবিভিপির প্রার্থী উমেশ চন্দ্র পেয়েছেন ২,১১৮টি ভোট। সহ সভাপতি পদে শিলিগুড়ির অভিজিৎ ঘোষ পেয়েছেন ২,৭৬২টি ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দীপিকা শর্মা পেয়েছেন ১,৮৪৮টি ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন বাম মোর্চার প্রার্থী প্রিয়াংশি আর্য। তিনি পেয়েছেন ৩,৪৪০টি ভোট। আর এবিভিপি প্রার্থী পেয়েছেন অর্জুন আনন্দ পেয়েছেন ২,৪১২টি ভোট। যুগ্ম সম্পাদক পদে বাম প্রার্থী মোহাম্মদ সাজিদ পেয়েছেন ৩,০৩৫টি ভোট। আর এবিভিপির প্রার্থী পেয়েছেন গোবিন্দ ডাঙ্গি পেয়েছেন ২,৫৯১ ভোট।