নিজস্ব প্রতিনিধি: ২৪’র ভোটের(General Election) আগে বিজেপি(BJP) বিরোধীদের মহাজোট তার যাত্রা শুরু করেছে এক মাস আগেই। বিহারের পাটনায় বসেছিল তাঁদের প্রথম দফার বৈঠক। এবার দ্বিতীয় দফার বৈঠক বসেছে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে। সোম সন্ধ্যা থেকেই সেই বৈঠকের সুর বাঁধার কাজ শুরু হয়ে যায়। এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বসেছে মূল বৈঠকের আসর। কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি, আপ, ডিএমকে সহ মোট ২৬টি দলের বৈঠকে হাজির হয়েছেন সোনিয়া গান্ধি(Sonia Gandhi), মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee), রাহুল গান্ধি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, শরদ পাওয়ার, নীতিশ কুমার, লালু প্রসাদ যাদব, অখিলেশ সিং যাদব, এম কে স্ট্যালিন সহ দেশের তাবড় তাবড় নেতানেত্রীরা সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। সূত্রে জানা গিয়েছে বৈঠকে নিজ বক্তব্য রাখার সময়েই মমতা নিশানা বানিয়েছেন গেরুয়া শিবিরকে।
আরও পড়ুন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে International Standard Exhibition Hall নিউটাউনে
সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতা তাঁর বক্তব্য শুরুই করেন বিরোধী জোট নিয়ে বিজেপি ও মোদির আতঙ্ক নিয়ে। বলেন, ‘বিরোধীদের একজোট হওয়ার এই ছবি দেখে ওদের (বিজেপি) কী অবস্থা হচ্ছে, বুঝতেই পারছেন, ঘাবড়ে গিয়েছে ওরা।’ উল্লেখ্য এদিন বিরোধী জোটের বৈঠক শুরুর এক ঘন্টা আগেই বিরোধী জোটকে আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। সেখানে তিনি যে শুধু বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতা-নেত্রীদের ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে অভিহিত করেছেন তাই নয়, তাঁর Body Language ও আক্রমণের ভঙ্গি বলে দিচ্ছে তিনি বেশ ভীতই হয়ে পড়েছেন বিরোধীদের এই বৈঠক নিয়ে। কেননা বিজেপি এদিনই যে ৩৮টি দলের সঙ্গে জোট বৈঠকে বসছে তার মধ্যে ২-৩টি দল বাদে বাকি সবাই নিজ নিজ রাজ্যেরি অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে। তাই তাঁরা এখন ভেসে থাকতে আর নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে বিজেপির ছত্রছায়ায় চলে এসেছে। আর বিজেপিও ভরাডুবি অবশ্যম্ভাবী বুঝে এখন এদেরকেই খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরছে। অন্যদিকে মহাজোটে সেই সব দলই সামিল হয়েছে যারা শুশু বিজেপি বিরোধী দলই নয়, তাঁরা নিজ নিজ রাজ্যে হয় ক্ষমতায় আছে কিংবা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের পরিসর দখল করে রেখেছে। কার্যত মোদির সেই ভয় দেখেই এদিন মমতা বৈঠকের শুরুতেই গেরুয়া শিবিরকে নিশানা বানিয়েছেন।
আরও পড়ুন ‘সুপ্রিমো বিচারপতিদের সম্মান করেন’, মমতার প্রশংসায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
মমতা এদিনের বৈঠকে মণিপুর নিয়েও মুখ খুলেছেন বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘মনিপুরে আগুন জ্বলছে, আর ওরা বিদেশ ভ্রমণ করে বেড়াচ্ছে।’ উল্লেখ্য এই বিরোধী জোট গতকালই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে জোটের তরফে মণিপুরে টিম পাঠানো হবে। সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে। হিংসার ঘটনায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন, যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাঁদের সবার সঙ্গে কথা বলা হবে এবং তাঁদের পাশে দাঁড়ানো হবে। সেই প্রতিনিধি দলে জোটের সব দলের প্রতিনিধিরাই থাকবেন। আর এই বিরোধী জোট যে ২৪’র ভোটে তাঁর গদি ছিনিয়ে নিতে পারে সেটা বুঝেই এদিন সকালেই সরকারি অনুষ্ঠান থেকে বিরোধী জোটকে আক্রমণ শানিয়েছেন মোদি। বলেছেন, ‘ওঁরা পরিবারকেই অগ্রাধিকার দেন। দেশকে নয়। দুর্নীতি ওঁদের অনুপ্রেরণা। যে যত বড় দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, বৈঠকে তাঁর আসন হবে তত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ‘বিরোধীদের মন্ত্র হল, অফ দ্য ফ্যামিলি, বাই দ্য ফ্যামিলি এবং ফর দ্য ফ্যামিলি।’ যদিও এই সবই তাঁর নিজের ভয় পাওয়ার জায়গা থেকেই মুখ দিয়ে বেড়িয়ে এসেছে সেটা তাঁর দেহ ভঙ্গিমাতেই সবাই বুঝে গিয়েছেন। অস্বীকার করার উপায় নেই এই বিজেপি ও মোদি বিরোধী জোটের চাকা যত গড়াবে ততই গেরুয়া শিবিরে ক্ষমতা হারানোর ভয় চেপে বসবে এবং তার জেরে আরও ভুলভাল বকবেন তাঁরা।