নিজস্ব প্রতিনিধি: নাগাল্যান্ডের ইস্যুতে গলা বুক জলে ডুবে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মাঝেই গত সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের লোকসভায় দেওয়া বিবৃতিকে ভালো চোখে দেখছে না নাগাল্যান্ডের মন জেলার বাসিন্দারা। গত শনিবার রাতে কাজ থেকে ফেরার পথে ১৩ জন নিরীহ শ্রমিকদের ‘ভুল’ করে গুলি করে খুন করে অসম রাইফেলসের বাহিনীরা। তাতেই মৃত্যু হয় ১৩ জনের, রবিবার মারা যান আরও ১ জন। আর এই ঘটনায় উত্তপ্ত নাগাল্যান্ড। রবিবার থেকেই দফায় দফায় অসম রাইফেলসের ক্যাম্প লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা। ঘটনায় গত সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিবৃতি দেন, ওটিং গ্রামের কাছে খনি শ্রমিকদের জঙ্গি ভেবে গুলি চালায় নিরাপত্তাবাহিনী। ঘটনাস্থলেই নিহত হন ছজন। ঘটনায় আহত দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করায় সেনাবাহিনী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, এলাকাবাসী ওই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা অসম রাইফেলসের শিবিরে চড়াও হলে বাহিনী নিরাপত্তার স্বার্থে গুলি চালালে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়।
যদিও এইসমস্ত দাবি মানতে নারাজ নাগাল্যান্ডের মন জেলার গ্রামবাসীরা। এই ঘটনায় সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে নাগাল্যান্ডের আদিবাসী গোষ্ঠী। তারা জানিয়েছেন, সরকারকে অবশ্যই এই দাবি মানতেই হবে, নইলে ফল অন্যথা হবে। দাবিতে আদিবাসী গোষ্ঠী জানিয়েছে, স্বাধীন তদন্ত কমিটি গড়তে হবে যত দ্রুত সম্ভব। কিংবা যে সিট গঠন করা হয়েছে সেখানে দু’জন নাগাল্যান্ডের নাগরিক সমাজের ব্যক্তিকে নিতে হবে তদন্তের জন্য। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অসম রাইফেলসের বাহিনীতে যারা গুলি চালানোতে অভিযুক্ত তাদের কড়া শাস্তি দিতে হবে জনসমক্ষে। মন জেলা থেকে অসম রাইফেলসের বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে আফস্পা তুলতে হবে।
আদিবাসী গোষ্ঠী এও দাবি জানিয়েছে, প্রত্যেক দাবি মানতে হবে দ্রুত। এদিকে নাগাল্যান্ড ইস্যুতে বেকায়দায় বাহিনী, গুলি চালানোর ঘটনায় বাহিনীর বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশ দায়ের করেছে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা। রাজ্য পুলিশের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, গোটা ঘটনাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাদের তরফে বলা হয়েছে, এই ধরনের অভিযানে স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নেওয়া হয় এবং এটাই দস্তুর। কিন্তু নিরাপত্তাবাহিনী স্থানীয় পুলিশকে না এই অভিযানের বিষয়ে কিছু জানিয়েছিল, না তাদের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেছে।
রাজ্য পুলিশের রুজু এফআইআরের বয়ান বলছে, ‘লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল, ঘটনার সময় রাজ্যপুলিশের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে কেউ ছিল না। না পুলিশকে আগে থেকে এই অভিযানের ব্যাপারে জানানো হয়েছিল। অতএব, এটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, নিরাপত্তাবাহিনীর মতলব কী ছিল?’