নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: নির্বাচন কমিশনের ‘গৈরিকীকরণ’ সম্পূর্ণ করতে দুই কমিশনার পদে নিজেদের ইয়েসম্যান বসাতে উদ্যোগ নিয়েছে মোদি সরকার। ইতিমধ্যেই ‘বিজেপি বান্ধব’ ১০ প্রাক্তন আমলা ও কূটনীতিবিদের নাম প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ১৪ মার্চ তাদের মধ্যে দুজনকে কমিশনার হিসাবে নিয়োগ করা হবে। ওই দিন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনার পদে যাদের নাম প্রাথমিকভাবে চিন্তাভাবনা করা হয়েছে তারা সবাই আরএসএসের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনার পদে সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যদেরই বসানো হবে। যাতে ভোটে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। ওই দুই কমিশনার নিয়োগের পরেই ভোট নির্ঘন্ট ঘোষণা করা হবে। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বৈঠকে অংশ নেবেন না লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী।
গতকাল শনিবার আচমকাই নির্বাচন কমিশনার পদে ইস্তফা দিয়েছেন অরুণ গোয়েল। তাঁর ইস্তফার ফলে তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশনে শুধু রয়ে গেলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে অবসর নিয়েছিলেন আর এক কমিশনার অনুপ চন্দ্র পাণ্ডে। দুই নির্বাচন কমিশনার না থাকার ফলে লোকসভার ভোট নির্ঘন্ট ঘোষণা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
ওই জটিলতা কাটাতে ইতিমধ্যেই আসরে নেমেছে আইন মন্ত্রক। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন মেঘাওয়ালের নেতৃত্বে সার্চ কমিটির পক্ষ থেকে দুই কমিশনার পদের জন্য পাঁচ জন করে মোট ১০ জনের নাম বেছে নেওয়া হয়েছে। ওই ১০ জনের অধিকাংশই এক সময়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে দায়িত্ব পালন করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারেও মোদি সরকারের জমানায় একাধিক দায়িত্ব সামলেছেন। আমলা মহলে কট্টর বিজেপি সমর্থক হিসাবেই পরিচিত।
সার্চ কমিটির তরফে যাদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে তাদের মধ্য থেকে দু’জনকে কমিশনার হিসাবে বেছে নেবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও ওই কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা এবং কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘাওয়াল। অর্থাৎ ওই বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সূত্রে নিজেদের ইয়েসম্যানদের বেছে নিতে কোনও সমস্যাই হবে না মোদি সরকারের।