28ºc, Haze
Friday, 24th March, 2023 9:12 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে রাজ্যে রাজ্যপালদের(Govornor) সঙ্গে সরকারের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। রাজ্যপালদের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে(Supreme Court) গিয়েছে তামিলনাড়ু থেকে তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র থেকে রাজস্থান। এহেন পরিস্থিতিতে মোদি সরকার(Modi Government) জানিয়ে দিল, সংবিধানের ১৫৫ নং ধারা সংশোধন করার কোনও সিদ্ধান্ত অথবা উদ্যোগ নেই। অর্থাৎ, রাজ্যপাল নিয়োগে সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর(Chief Ministers) সঙ্গে আলোচনা নিছক নিয়মমাফিকই চলবে। কিন্তু রাজ্যপাল মনোনয়নে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে না।
বুধবারই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আস্থা ভোটের নির্দেশ দেওয়ার আগে রাজ্যপালদের ভেবে দেখতে হবে। অর্থাৎ, তাঁর একটি সিদ্ধান্তের জন্য কোনও সরকারের পতন ঘটল, রাজ্যপালের ভূমিকা এমন যেন না হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় সিপিএম সদস্য জন ব্রিটাস প্রশ্ন করেছিলেন, সরকারিয়া কমিশনের সুপারিশ গ্রহণ করে রাজ্যপাল মনোনয়নে মুখ্যমন্ত্রীদের মনোনয়নকে বাধ্যতামূলক করা হবে কি না? সেই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছেন, রাজ্যপাল নিয়োগের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় এবং হবে। কিন্তু সংবিধানের ১৫৫ নং ধারা সংশোধন করার কোনও সিদ্ধান্ত অথবা উদ্যোগ কেন্দ্রের নেই। সোজা কথায় এতকাল যেভাবে রাজ্যপাল মনোনয়ন হয়ে এসেছে, সেই পন্থাই চলবে। রাষ্ট্রপতির হাতেই থাকবে রাজ্যপাল নিয়োগ ও তাঁকে অপসারণের ক্ষমতা। যা কার্যত বলে দিচ্ছে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক সংক্রান্ত সরকারিয়া কমিশনের রিপোর্টের সুপারিশ মানতে রাজি নয় মোদি সরকার।
দেশের চলতি ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারই স্থির করে কোন রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে কাকে বাছাই করা হবে। রাষ্ট্রপতি সচরাচর সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেন। রীতি হল, সংশ্লিষ্ট মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করবে কেন্দ্র। কিন্তু সেটা আদতে নিছকই প্রতীকী। কারণ, স্বাধীনতার পর থেকে বহুবার রাজ্যপাল মনোনয়ন নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরোধ হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের আপত্তি ধোপে টেকেনি। পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল ধরমবীর বনাম যুক্তফ্রন্ট সরকারের বিরোধ চরম জায়গায় গিয়েছিল। বিহারে মুখ্যমন্ত্রী এম পি সিনহা আপত্তি করেছিলেন নিত্যানন্দ কানুনগোকে রাজ্যপাল হিসেবে মনোনয়নে। ওড়িশা, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ সর্বত্র রাজ্যপাল নিয়োগের সময় আপত্তি করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীরা। সেই আপত্তি গ্রাহ্য করা হয়নি। সরকারিয়া কমিশন সুপারিশ করেছিল এই সংঘাত এড়াতে মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মতি যেন বাধ্যতামূলক হয়। তাহলে রাজ্যের প্রশাসনিক কাজ অনেক বিঘ্নহীন হবে। কিন্তু মোদি সরকার বুঝিয়ে দিল, রীতি বদল হচ্ছে না। অর্থাৎ, রাজ্যপাল নিয়োগে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।