নিজস্ব প্রতিনিধি: জলপাইগুড়ির বৈকন্ঠপুর রাজ পরিবারের ৫১২ বছরের প্রাচীন পুজো ঘিরে কয়েকদিন উৎসবে মেতেছিলেন এলাকাবাসী। যদিও দূরদুরান্ত থেকেও এই প্রাচীন পুজো দেখতে আসেন সাধারণ মানুষ। পুজোর কটাদিন রাজবাড়ির দরজা সকলের জন্যই খোলা থাকে। জলপাইগুড়ি বৈকন্ঠপুর রাজবাড়ির পুজো মানেই এক বিশেষ আবেগ। নরবলি বন্ধ হয়েছে প্রায় ৪০০ বছর আগে। তবু অনেক প্রাচীন রীতিনীতি আজও পালিত হয় এই পুজোয়। কিছু প্রথা বিলুপ্ত হলেও ষষ্ঠীর বোধন, অষ্টমীর পুস্পাঞ্জালী, সন্ধিপুজো এবং দশমীর দিন সিঁদুর খেলা – এই সব কিছুতেই জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির মন্দির প্রাঙ্গণ থাকে জমজমাট।
শুক্রবার বিজয়া দশমীর দিনও বৈকন্ঠপুর রাজ পরিবারের প্রাচীন নিয়ম মেনে শূন্যে গুলি ছুড়ে দেবী প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। ঘড়ির কাটায় বেলা ২.৩০ বাজতেই দো-নলা বন্দুক আকাশের দিকে তাঁক করে গুলি ছোড়েন রাজ পরিবারের সদস্য সৌম্য বসু। যদিও এদিন সকাল থেকেই মা দুর্গাকে মিষ্টি মুখ করিয়ে শুরু হয়েছিল সিঁদুর খেলা। এদিন বিসর্জন উপলক্ষে রাজবাড়ীতে জমায়েত হয় কয়েক হাজার যুবক যুবতীর। শুরু হয় ঢাকের তালে উদ্ধাম নৃত্য। যা দেখে স্বভাবতই বিরক্ত রাজ পরিবারের সদস্যরা। রাজবাড়ীর নাটমন্দির থেকে প্রতিমা নিরঞ্জনের পুকুরের দূরত্ব মাত্র ৫০ মিটার। এই পথটুকু দেবীকে রথে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। রথের দড়ি টানেন স্থানীয়রা। কিন্তু ব্যাপক ভিড়ের জন্য এইটুকু পথ যেতেই এদিন সময় লাগে গেল অন্তত ৩ ঘন্টা।
তিস্তার এক পাড়ে থাকা বৈকন্ঠপুর রাজবাড়ী থেকে শুক্রবার কৈলাশের পথে রওনা দিলেন উমা। অপরদিকে আগামীকাল তিস্তার অপর পাড় অর্থাৎ ডুয়ার্সের বাসিন্দারা মাতবেন এক দিনের দুর্গাপুজোয়। দেবি দুর্গা আগামীকাল ভান্ডানী রুপে পূজিত হবেন ময়নাগুড়ি ও ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায়।