নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে(Ghatal Constituency) তৃণমূল তৃতীয়বারের জন্য প্রার্থী করেছে টলি তারকা দেব থুড়ি দীপক অধিকারীকে। ২০১৪ সালে দেব এই কেন্দ্রে প্রথমবার দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছিলেন ২ লক্ষ ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে। কিন্তু ২০১৯ সালে তিনি এই কেন্দ্র থেকে ফের জয়ী হলেও জয়ের ব্যবধান কার্যত অর্ধেক হয়ে যায়। দেব জেতেন ১ লক্ষ ৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে। এবার তাঁকে ভোট বৈতরনী পার করতে মাঠে নামলেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পিংলাতে(Pingla) ছিল তৃণমূলের নির্বাচনী জনসভা। সেই সভা থেকেই মমতা তোপ দাগলেন সদ্য সদ্য কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) দেওয়া নিয়োগ দুর্নীতির রায়ের(Case Verdict of School Recruitment Scam)উদ্দেশ্যে। একই সঙ্গে একলপ্তে ২৬ হাজার মানুষের চাকরি কেড়ে নেওয়ার রায় প্রদানের জেরে তিনি যে মুখ বুজে বসে থাকবেন না সেটাও জানিয়ে দিলেন।
এদিনের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘আপনারা মানুষখেকো বাঘ দেখেছেন, গ্রামগঞ্জের মানুষের কাছে এটা প্রচলিত কথা। আমি বলব, চাকরিখেকো মানুষ দেখেছেন? চাকরিখেকো বিজেপি পার্টি দেখেছেন? চাকরিখেকো সিপিএম পার্টি দেখেছেন? চাকরিখেকো রাম-বাম-শাম দেখেছেন? ২৬ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি খেয়ে নিল! আপনারা চাকরি খেলেন, তার পর বলছেন যে বেতন পেয়েছেন, তা ১২ শতাংশ সুদ সমেত ফেরত দিতে হবে। যিনি এই রায় দিয়েছেন, তাঁর আমি নাম করছি না। কিন্তু তাঁর যদি সারা জীবনের সব কিছু চলে যায় আর বলা হয় সব টাকা ফেরত দাও, তা হলে তিনি পারবেন তো তাঁর সব বেতনের টাকা ফেরত দিতে? যখন ইচ্ছে হল সবার চাকরি খেয়ে নেওয়া! মগের মুলুক? যারা ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি খেয়ে নিল, তাদের ছেড়ে দেব? কারও চাকরি এ ভাবে খাওয়া যায় না। যদি কোনও ভুল থাকে বলবেন, সংশোধন করে নেবে।’
এর পাশাপাশি মমতা বলেন, ‘যার চাকরি গেল সে তো শ্রমটা দিয়েছে। শ্রমের টাকাটা আপনি নেবেন কী করে? শুধু শ্রমদান নয়, ২৬ হাজার শিক্ষক যদি চলে যায়, পড়াবে কে? আমি শুনেছি আরএসএসকে স্কুলগুলির দায়িত্ব নিতে বলছে, আমি অভিভাবকদের জিজ্ঞাসা করছি, আপনারা এভাবে স্কুলের সব দায় দায়িত্ব আরএসএসে হাতে তুলে দেবেন তো? আমি শুনেছি সেনা স্কুলের দায়িত্ব আরএসএসকে দিয়েছে। লজ্জা করে না? চাকরির অধিকার কাড়তে কাউকে দেব না। ১০ লক্ষ চাকরি আমি প্রস্তুত করে রেখেছি। মহামান্য আদালতের কাছে আমরা বিচারের আশা করি। কিন্তু কত মামলা দেড়শো-দুশো বছর ধরে পড়ে থাকে। মানুষের টাকা নষ্ট হয়। তার সমাধান হয় না। মানুষ যখন কোথাও বিচার পান না, তখন আদালতই ভরসা। সেই আদালতেই এখন বিজেপি খুন করলেও বেল আর তৃণমূল কিছু না করলেও জেল। তবু বলব, বিচারব্যবস্থায় এখনও কিছু ভালো মানুষ রয়েছেন। তাঁদের বলব, বিজেপির কথা শুনে রায় দেবেন না। যতদূর যেতে হয় যাব।’