নিজস্ব প্রতিনিধি: সামনেই দুর্গাপুজো। আর পুজো মানেই সরকারি হোক বা বেসরকারি, সকল কর্মচারীদের একটা লম্বা ছুটি। দুই ধরনের বাঙালির দেখা মেলে পুজোর দিনগুলিতে। একটি পুজোর দিনগুলিতে কলকাতা ছেড়ে বেরোনোর নামই করেন না, অন্যটি সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন। কারণ, এই লম্বা ছুটি সারা বছরে খুব কমই মেলে। তাই সুযোগ বুঝেই পগাড় পার। টিকিট কেটে নেন পাহাড় কিংবা সমুদ্রের। সাধারণত লক্ষী পুজো পর্যন্ত ছুটি থাকে। তাই প্রায় ১০ থেকে ১২ দিন ঘুরে আসেন পাহাড় কিংবা সমুদ্রের। আমাদের দেশে ভ্রমণের সংখ্যা কম নেই। আবার অনেকেই পুজোর দিনগুলি কাটিয়ে তারপর কাছে-পিঠে কোথাও বেরিয়ে পড়েন। যদিও কথাতেই তো আছে, বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। তাই করোনার ত্রাস কমতেই এই বছরও পুজোর দিনগুলিতে প্ল্যান ছকে নিয়েছেন মোটামুটি ভ্রমণপিপাসু বাঙালি। কোথায় যাবেন ভাবছেন? যদি দুরপাল্লায় যেতে না চান তাহলে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যেই ঘুরে আসুন কিছু কিছু নজরকাড়া জায়গাগুলি থেকে। যার মধ্যে রয়েছে-
১) পাহাড়:
পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসুন পাহাড় থেকে। তা হতে পারে দার্জিলিং বা নিরিবিলি পাহাড়ের স্বাদ নিতে ঘুরে আসতে পারেন রামধুরা। যেখানে পাবেন, সারি সারি পাইন গাছ আর তার মাঝে কাঞ্চনজঙ্ঘা। কালিম্পং থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, এই স্বর্গরাজ্যটি। হনুমান টক থেকে শুরু করে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখে তারপর ফিরুন। এছাড়াও আরেকটি ছোট চটকপুর থেকেও ঘুরে আসতে পারেন, পাহাড়ে ঘেরা এই শৈল শহরটির দুরত্ব দার্জিলিং থেকে মাত্র ২৬ কিলোমিটার। এখানে ওয়াচ টাওয়ার থেকে সান্দাকফুও দেখতে পারবেন। এছাড়া দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জোরপোখরি থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। এছাড়াও চা বাগান দেখতে চলে যেতে পারেন তাকদা। শান্ত, নিরিবিলি, নির্জন তাকদা দার্জিলিং থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এছাড়াও সিলারি গাঁও যেতে পারেন।
২) জঙ্গল:
পুজোর ছুটিতে জঙ্গলও যেতে পারেন। যে তালিকায় রাখতে পারেন, ডুয়ার্স। নদী, জঙ্গল, বন্যপ্রাণী আর পাহাড়ি গ্রাম নিয়ে বেষ্টিত এখানকার প্রকৃতি। চিলাপাতা, জলদাপাড়া, খয়েরবাড়ি, বক্সা, জয়ন্তী, রাজভাতখাওয়া, টোটোপাড়াসহ নানান জায়গা দেখে নিতে পারেন।
৩) গড়পঞ্চকোট:
এছাড়া রাঢ় বঙ্গের স্বাদ নিতে চাইলে চলে যেতেই পারেন পুরুলিয়ার গড়পঞ্চকোট। শাল, পিয়াল, আর ঘন মহুয়ার জঙ্গলে ঘেরা গড়পঞ্চকোট ছুটির দিনের ভ্রমণের জন্য আদর্শ জায়গা। কলকাতা থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গড়পঞ্চকোট। এখানে দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে, পাঞ্চেত বাঁধ, বিহারীনাথ পাহাড়, বড়ন্তি পাহাড়, মুরারডি লেক, বিরিঞ্চিনাথের মন্দির, কল্যানেশ্বরী মন্দির ও জয়চন্ডী পাহাড়। সবগুলো জায়গাই গড়পঞ্চকোট থেকে মাত্র ২০-৩০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত।
৪) হেরিটেজ
এছাড়াও পুজোর দিনগুলিতে ছুটি কাটাতে বা রাজার হালে থাকতে চাইলে যেতেই পারেন ইটাচুনা রাজবাড়ি, বাওয়ালি রাজবাড়িতে। যেখানে রয়েছে, রাজকীয় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে হোম স্টে করার আদর্শ জায়গা। এর জন্যে এই দুই রাজবাড়ির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে ঘর বুকিং করতে পারেন।
৫) গ্রামের বনেদি বাড়ির পুজো:
শহুরে জীবনে হাঁপিয়ে উঠেছেন, তাহলে এবার পুজোটা গ্রাম গিয়ে কাটান। দুর্গাপুজোও মিস হবে না আবার ছুটিও কাটাতে পারবেন। গ্রামের বনেদি বাড়ির পুজো গুলি থেকে ঘুরে আসতে পারেন।