নিজস্ব প্রতিনিধি: ধাপে ধাপে ছাত্র-ছাত্রীদের ফের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রায় হাজার তিনেক ছাত্র ক্যাম্পাসে ফিরেও গিয়েছিল। অনলাইনে ক্লাস করার পাশাপাশি শুধু মেনে চলতে হচ্ছিল কিছু বিধি-নিষেধ। কিন্তু ফের করোনা আক্রমণে কার্যত টালমাটাল অবস্থা রাজ্য তথা দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খড়গপুর আইআইটি – র। ক্যাম্পাসে গত কয়েক দিনে প্রায় ৬০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ছাত্রদের পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্যরাও রয়েছেন। ফলে বাকি ছাত্রদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারটি আপাতত কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেল বলেই অভিভাবকদের একটি অংশ মনে করছেন। ছাত্রদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আইআইটি কর্তৃপক্ষ।
করোনা সংক্রমণের জেরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় নিজেদের পড়াশুনো, গবেষণা নিয়ে কার্যত দিশেহারা অবস্থা আইআইটি-র বহু ছাত্র-ছাত্রীর। বিশেষ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যাঁরা এমটেক বা গবেষণার সঙ্গে যুক্ত তাঁরা বিপাকে পড়েছেন সব থেকে বেশি। অনলাইনে তাঁরা এতদিন ক্লাস করলেও ক্যাম্পাসে থাকলে অন্যান্য যে সমস্ত সুবিধাগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। অধ্যাপকদের সঙ্গেও সামনাসামনি কোনও আলোচনা করার সুযোগ মিলছে না। ল্যাবরেটরি যেতে পারছেন না বহু ছাত্র। সবটাই এতদিন চলছিল অনলাইনেই। ফলে আইআইটি -র বহু পড়ুয়া উদ্বেগের সঙ্গে দিন কাটাচ্ছিলেন। অধ্যাপকরাও চাইছিলেন দ্রুত ছাত্রদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনতে। সেই মতো সংক্রমণ কিছুটা কমতে কমতে ছাত্রদের ফের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হতে আশায় বুক বেঁধেছিলেন ছাত্ররা। ঠিক হয়েছিল, ক্যাম্পাসে ফিরলেও হোস্টেল থেকে অনলাইনে কোনও সময় ছাত্রদের অফলাইনেও ক্লাস হবে।
কিন্তু বিধি বাম!!! ফের করোনা থাবা বসাতে শুরু করায় নতুন করে বিপাকে পড়েছেন আইআইটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ছাত্ররাও। খড়গপুর আইআইটি ক্যাম্পাসে ছাত্রদের ফিরিয়ে আনার পর সেলফ কোয়ারান্টাইন-সহ অন্যান্য কড়া বিধিনিষেধ ব্যবস্থা চালু করলেও শেষ পর্যন্ত সংক্রমণ ঠেকানো যায়নি। ছাত্রদের সঙ্গে কর্মী, অধ্যাপকদেরও অনেকের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ফলে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ ফের জমতে শুরু করেছে দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে অন্যতম উৎকর্ষ এই কেন্দ্রটিতে। ছাত্রদের একাংশ জানাচ্ছে, ক্যাম্পাসে সব রকম বিধিনিষেধ ও কড়া নিয়ম চালু এবং নজরদারি থাকা স্বত্বেও হঠাৎ সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে অনেকেই যাঁরা ক্যাম্পাসে ফিরবে বলে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিল, তারা এখন বিপাকে পড়েছে। আর তার ফলে যে সমস্ত ছাত্র ও গবেষকরা এখনও ক্যাম্পাসে ফিরতে পারেননি, তাঁদের আরও কিছুদিন অনলাইনেই ক্লাস করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।