নিজস্ব প্রতিনিধি: নির্বাচনের পরে রাজ্য বা কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রী হিসাবে কারা কাজ করবেন তা জানতে যেমন সর্বস্তরে একটা আগ্রহ তৈরি হয়, ঠিক তেমনি কলকাতা পুরনিগমের ক্ষেত্রেও বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছিল মেয়র ইন কাউন্সিলে এবারে কারা কারা আসবেন, কারা থাকবেন আর কারাই বা বাদ যাবেন, তা জানতে। কার্যত মেয়র পদের দৌড়ে যে ফিরহাদ হাকিমই এগিয়ে রয়েছেন সেটা সবাই জানতেন। তাই মেয়র পদে কে বসবেন সে নিয়ে যত না আগ্রহ ছিল তার থেকে বেশি আগ্রহ ছিলেন মেয়র ইন কাউন্সিলে কারা কারা থাকছেন তা নিয়ে। তার একটা বড় কারন তৃণমূল এখন এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। একদিকে যেমন দল রাজ্য স্তর থেকে জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালনে পদক্ষেপ করছে তেমনি দলের অন্দরে প্রবীণদের ধরে রাখার পাশাপাশি নবীন প্রজন্মকে তুলে আনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এর কোনও প্রভাব কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ইন কাউন্সিলে পড়বে কিনা সেটাই সবাই বেশি করে জানতে চাইছিল। আর এই জায়গাতেই এদিন দলনেত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারসাম্য বজায় রাখার যে সিদ্ধান্ত নিলেন যা দল এককথায় মেনে নিয়েছে।
২০১৫ সালে যে পুরনির্বাচন হয়েছিল কলকাতায় তারপরে নবগঠিত মেয়র পারিষদে ঠাঁই হয়েছিল মেয়র সমেত ১৪জন কাউন্সিলরের। এবারেও মমতা জানিয়ে দিয়েছে মেয়র ও ডেপুটি মেয়র নিয়ে ১৪জনই থাকছেন। গতবছর কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিডের কারনে তা আর হয়নি। তার জেরে মেয়র সহ মেয়র ইন কাউন্সিলকেই কলকাতা পুরনিগমের প্রশাসকমণ্ডলী হিসাবে নিয়োগ করেছিল রাজ্য সরকার। সেই প্রশাসকমন্ডলীতে যারা যারা ছিলেন তাঁদের মধ্যে এবারে একমাত্র রতন দে ভোটে দাঁড়াননি। বাকি সবাই অবশ্য প্রার্থী হন এবং সকলেই জয়ীও হন। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে মেয়র ইন কাউন্সিলে নতুন মুখ তুলে আনার ক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছিল কারোর কারোর বাদ যাওয়ার বিষয়টি। বাস্তবেও এদিন সেটাই দেখা গিয়েছে। মহারাষ্ট্র নিবাস হলে এদিন কলকাতা পুরনিগমের নবনির্বাচিত দলের কাউন্সিলরদের বৈঠকে ডেকেছিল তৃণমূল। সেই বৈঠকের মধ্যমণি ছিলেন স্বয়ং দলনেত্রী। কার্যত তিনিই এদিন নিজ মুখে মেয়র ইন কাউন্সিল কারা হবেন তা জানিয়ে দেন। দেখা যায় পুরাতন বোর্ডের ৩জন মেয়র পারিষদ এবারে বাদ পড়েছেন, পরিবর্তে এসেছে ৪টি নতুন মুখ।
ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বাধীন এই মেয়র পারিষদে এবারেও থাকছেন ডেপুটি মেয়র তথা বিধায়ক অতীন ঘোষ, বিধায়ক দেবাশিষ কুমার, বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার, তারক সিং, স্বপন সমাদ্দার, বৈশ্বানর চ্যাটার্জী, আমিরুদ্দিন ববি, রাম পেয়ারে রাম ও অভিজিৎ মুখার্জী। নতুন যারা এলেন এই পারিষদে তাঁরা হলেন সন্দীপন সাহা, জীবন সাহা, মিতালি ব্যানার্জী ও সন্দীপরঞ্জন বক্সি। আগের বোর্ড থেকে যারা বাদ পড়লেন তাঁরা হলেন মঞ্জর ইকবাল, সামসুজ্জামান আনসারি ও ইন্দ্রানী সাহা ব্যানার্জী।